রাশিদুল ইসলাম : ভারতের একাধিক রাজ্যে প্রবল বিক্ষোভের পর অবশেষে সিদ্ধান্ত বদল। অগ্নিপথ প্রকল্পে আবেদনের ক্ষেত্রে নিয়মে বড় বদল আনল কেন্দ্র। শেষমেশ এনডিএ-র শরিক দল জেডিইউ-এর ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে নিয়োগে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা পর্যালোচনার দাবিকে মান্যতা দিল মোদি সরকার। বৃহস্পতিবার দিনভর একাধিক রাজ্যে এই প্রকল্পে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর দাবিতে চলে প্রবল বিক্ষোভ। রাস্তা, ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে বিহারে। হরিয়ানাতেও চলে তুমুল প্রতিবাদ। উপর্যুপরি এই প্রতিবাদের জেরে শেষমেশ পিছু হঠল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, অগ্নিপথ প্রকল্পে আবেদনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স সাড়ে ১৭ ও সর্বোচ্চ বয়স ২১ বছর রাখা হয়। তবে গত দু’বছরে এই প্রকল্পে কোনও নিয়োগ না হওয়ার জেরে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২-এ এই প্রকল্পে নিয়োগের জন্য এককাকালীন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে নিয়োগে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিভাগে নিয়োগে অগ্নিপথ প্রকল্পের সূচনা করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। যাকে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয় বিহার, হরিয়ানা-সহ একাধিক রাজ্য। বিহারের আধ ডজনেরও বেশি জেলায় অগ্নিপথ বিরোধী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। চাকরিপ্রার্থীরা রেল, রাস্তা অবরোধ করে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

পুরনো সেনা নিয়োগ ব্যবস্থা ফেরানোর দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। তবে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষমেশ সিদ্ধান্ত বদল কেন্দ্রের। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জনিয়েছে, ২০২০ সালে যাদের বয়স ২১ বছর ছিল তখন যখন নিয়োগ বন্ধ ছিল। তাই তাদের যোগ্য হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র এই বছরের জন্যই।

মঙ্গলবার প্রথমে জানানো হয়েছিল যে মূল প্রকল্পের অধীনে শুধুমাত্র ১৭ এবং ২১ বছর বয়সী প্রার্থীরাই নিয়োগের জন্য যোগ্য। তবে বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ২০২২ সালের জন্য অগ্নিপথ স্কিমে নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়েছে। গত দু’বছরে নিয়োগ না হওয়ায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অগ্নিপথ প্রকল্পের আওতায় নিয়োগে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ চরমে ওঠে বিহারে। এই রাজ্যে জেডি (ইউ) এনডিএর শরিক দল। বিহারের কাইমুরে চাকরিপ্রার্থীরা একটি ট্রেনের একটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অন্য এক জায়গায় বিক্ষোভকারীরা আরও দুটি কোচ জ্বালিয়ে দেয়। গোপালগঞ্জের সিধওয়ালিয়া স্টেশন ও ছাপড়ায় প্রবল বিক্ষোভ ছড়ায়। বিভিন্ন স্থানে অন্তত ট্রেনের ৮টি বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। জেডিইউ-এর তরফেই এই প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয় কেন্দ্রকে। শেষমেশ তাতে সাড়া মোদি সরকারের।