রাশিদুল ইসলাম: [২] শীর্ষ মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইহুদিবিদ্বেষী একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে সমর্থন করছেন উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউস এটিকে ‘জঘন্য তত্ত্ব’ বলে উল্লেখ করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইবিএম, ওয়াল্ট ডিজনি, ওয়ার্নার ব্রস ডিসকভারি এবং কমকাস্টসহ বড় বড় মার্কিন কোম্পানিগুলোও এক্সে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ রেখেছে। সিএনএন/বিবিসি
[৩] মাস্ক বলেছেন যেসব কোম্পানি তার এক্সে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন।
[৪] গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক ব্যবহারকারীর দেওয়া পোস্টে দাবি করা হয়, জাতিগত ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইহুদি জনগণ এবং বামপন্থীরা শ্বেতাঙ্গদের সরিয়ে অশ্বেতাঙ্গ অভিবাসীদের জন্য জায়গা তৈরি করতে চাইছে। একে কেন্দ্র করে ‘শ্বেতাঙ্গ নিধন’-এর মতো ঘটনা করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
[৫] এ পোস্টটিকে ‘গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হলেও ইলন মাস্ক বলেছেন, এখানে সত্যি কথাই বলা হয়েছে। এর নিন্দা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তাদের অভিযোগ, এর মধ্য দিয়ে ইলন মাস্ক ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। আর এটি আমেরিকান জনগণের মূল মূল্যবোধের পরিপন্থী।
[৬] এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রসঙ্গ টেনে আনেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস। তিনি বলেন, ‘হলোকাস্টের সময় থেকে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী দিনটির (৭ অক্টোবর) এক মাস পর এমন জঘন্য মিথ্যার পুনরাবৃত্তি অগ্রহণযোগ্য।’
[৭] এদিকে ইলন মাস্কের পোস্টের পর ডিজনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ওয়ার্নার ব্রস ডিসকভারি ও কমকাস্ট, লায়ন্স গেট এন্টারটেইনমেন্ট ও প্যারামাউন্ট গ্লোবালও বলেছে তারাও এক্সে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ রেখেছে। অ্যাপলও বিজ্ঞাপন বন্ধ করছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
[৮] বৃহস্পতিবার অ্যাডলফ হিটলার ও নাৎসি দলকে সমর্থন করে লেখা কনটেন্ট অর্থাৎ ইহুদিবিদ্বেষী কনটেন্টের পাশে নিজেদের বিজ্ঞাপন দেখে এক্সে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে আইবিএম।
[৯] সামাজিক মাধ্যম এক্স বা সাবেক টুইটারের মালিক ইলন মাস্ক ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছেন। তিনি সম্প্রতি ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের বোমা বর্ষণে নারী ও শিশু মৃত্যুর বিষয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোতে বিশ্বাসযোগ্য খবর পরিবেশন না করার সমালোচনা করেছিলেন। এরপর তিনি পশ্চিমাদের রোষানলে পড়েন।
[১০] ইলন মাস্ক সম্প্রতি বলেছেন, আমেরিকার সমাজে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে ইহুদিরা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। এছাড়া, গাজা উপত্যকায় ব্যাপকভাবে শিশু হত্যার সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যার ক্ষোভ ও কষ্ট থেকেই হামাসের জন্ম হয়েছে। আরেকটি পোস্টে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আমি যে বক্তব্য দিয়েছি তা প্রকৃতপক্ষেই সত্য। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদ বা এশীয় বর্ণবাদ অথবা যেকোনো ধরনের বর্ণবাদের বিরুদ্ধেই আমার অবস্থান।’
আপনার মতামত লিখুন :