ইকবাল খান: [২] মার্কিন কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের ভেতরে ডানপন্থীদের বিদ্রোহে স্পিকার পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন কেভিন ম্যাকার্থি। মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদের কোন স্পিকারের অনাস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ার ঘটনা দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম। চূড়ান্ত ফলে ২১৬-২১০ ভোটে হেরে গেছেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে কংগ্রেসম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়া কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলের এই নেতা। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।
[৩] রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা প্যাট্রিক ম্যাকহেনরিকে ভারপ্রাপ্ত স্পিকার ঘোষণা করা হয়েছে।
[৪] শাটডাউন এড়াতে শেষ মুহুর্তে সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য তহবিল নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ বা সিনেটে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে সমঝোতা করার পর রিপাবলিকান দলের অতি রক্ষণশীলরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। কেভিন ম্যাকার্থিকে অপসারণে প্রক্রিয়া শুরুর জন্য সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফ্লোরিডার রিপাবলিকান নেতা ম্যাট গেইটজ।
[৫] মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিপাবলিকান দলের আইন প্রণেতাদের সঙ্গে এক সভায় কেভিন ম্যাকার্থি জানান যে স্পিকার পদের জন্য তিনি আর লড়বেন না। পরে তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যাট গেইটজের তীব্র সমালোচনা করে তাকে ‘মনোযোগ আকর্ষণকারী’ হিসেবে অভিহিত করেন। “আপনারা জানেন যে পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগত,” কেভিন ম্যাকার্থি বলছিলেন এক সংবাদ সম্মেলনে। “এর সাথে অর্থ ব্যয়ের (তহবিল) কোন সম্পর্ক নেই”। কেভিন ম্যাকার্থি বলেন, যেসব কট্টরপন্থীরা তাকে উৎখাত করেছে তারা ‘রক্ষণশীল’ নয়।
[৬] ম্যাট গেইটজ সহ কয়েকজন ডানপন্থী তাকে সমর্থন করতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত জানুয়ারিতেই ১৫ দফা ভোটাভোটির পর স্পিকার হয়েছিলেন কেভিন ম্যাকার্থি। রিপাবলিকান দলের মধ্যে ম্যাট গেইটজসহ আটজন তাকে অপসারণের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। দলের বাকী ২১০ জন তার পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। তবে এবার ডেমোক্রেটরাও নিজ দলের মধ্যে কেভিন ম্যাকার্থিকে উৎখাতের প্রচেষ্টার সঙ্গে হাত মেলান। প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট দলীয় নেতা হাকিম জেফরিস তার সহকর্মীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেভিন ম্যাকার্থিকে উদ্ধারের জন্য ভোট না দেয়ার কথা জানান।
[৬] ভোটের আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ এ এক পোস্টে লিখেন- নিজেদের পরিবর্তে ‘উগ্র বাম ডেমোক্রোটদের’ বিরুদ্ধে দলের লড়াই করা উচিত।
[৭] তবে উদারপন্থী রিপাবলিকান হিসেবে পরিচিত ন্যান্সি মেইস কেভিন ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার বিষয়টি অনেক বিশ্লেষকের দৃষ্টি কেড়েছে। এখন এটা পরিষ্কার নয় যে অস্থায়ী স্পিকার পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে অফিস চালাতে পারবেন কি-না, নাকি তিনি শুধু নতুন স্পিকার নির্বাচনের বিষয়টিই দেখভাল করবেন। লুজিয়ানার রিপাবলিকান আইন প্রণেতা স্টিভ স্কেলিস ও মিনেসোটার টম এমারের নাম শোনা গেলেও তাদের দিক থেকে কোন আগ্রহ এখনো দেখা যায়নি।
[৯] হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জিন পিয়েরে এক বিবৃতিতে বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘আশা প্রকাশ করেছেন যে হাউজ দ্রুতই একজন স্পিকার নির্বাচিত করতে সক্ষম হবে’। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্টের পরেই স্পিকারের অবস্থান।
আপনার মতামত লিখুন :