শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৬ জুন, ২০২২, ১২:১০ দুপুর
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২২, ০১:৫৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উপত্যকা ত্যাগ করে

‘এক তৃতীয়াংশ কাশ্মীরি পণ্ডিত-কর্মচারি জম্মুতে চলে গেছেন’

রাশিদুল ইসলাম : জম্মু-কাশ্মীরে হিন্দুদের লক্ষ্যবস্তু হত্যার ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে অভিবাসী কাশ্মীরি পন্ডিত কর্মচারীদের এক তৃতীয়াংশ উপত্যকা থেকে চলে গেছেন। শনিবার বিজেপি নেতা ও জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বিভাগের ইনচার্জ অশ্বিনী চুঙ্গরু ওই দাবি করেছেন।

গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চুঙ্গরু বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে ২০০০ অভিবাসী কাশ্মীরি পন্ডিত কর্মচারি তাদের পরিবারের সাথে জম্মুতে পৌঁছেছেন। মে মাসের প্রথম দিকে শুরু হওয়া এই সন্ত্রাসী হামলা (হিন্দুদের টার্গেট করে) দেখে তারা হতবাক ও বিচলিত।’

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় দু’হাজার পরিবার জম্মুতে পৌঁছেছে। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মানুষ নিজেরাই চলে যাচ্ছেন। তারা নিজেরাই এসব করছে। প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’ 

বিজেপি নেতা অশ্বিনী চুঙ্গরু আরও বলেন, ‘তার সম্প্রদায়কে কাশ্মীরে ধর্মনিরপেক্ষতা বা শান্তি প্রদর্শনের জন্য ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।’প্রকৃতপক্ষে, এই সংখ্যাটি প্রায় ৬ হাজার হিন্দু পণ্ডিতদের এক তৃতীয়াংশ যারা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাবর্তন এবং পুনর্বাসন প্যাকেজের অধীনে ২০১০ সাল থেকে উপত্যকায় কাজ করেছেন। 

অশ্বিনী চুঙ্গরুর দাবি (অভিবাসীদের সংখ্যা সম্পর্কে) যদি সত্য হয়, তাহলে পণ্ডিতদের উপত্যকায় ফিরিয়ে আনার সরকারের পরিকল্পনা কাজ করছে না। তিনি বলেন, জম্মুতে স্থানান্তরের বিষয়ে পণ্ডিতদের বিক্ষোভ কাশ্মীরে প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তার মতে, এটি প্রমাণ করে যে তারা হয় এলাকা ছেড়েছে বা এলাকা ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।   

তিনি আরও বলেন, ‘আপনি হিন্দুদের নেকড়েদের হাতে ছেড়ে দিতে পারেন না, তাহলে ১৯৯০ সাল এবং এখনকার মধ্যে পার্থক্য কী হবে?’ যদিও নতুন করে প্রস্থানের বিষয়ে সরকার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।  তিনি ওই কথাগুলো এমন সময়ে বলেছেন, যখন কাশ্মীর পণ্ডিত সংগ্রাম সমিতি (পন্ডিতদের প্রতিনিধিত্বকারী কমিটি, যাদের লোকেরা কখনও উপত্যকা থেকে স্থানান্তরিত হয়নি) হাইকোর্টে সরকারকে তাদের স্থানান্তরিত করার এবং জম্মুতে পাঠানোর অনুরোধ করেছিল। কমিটির প্রতিনিধিদল প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি করেছে, প্রশাসন রাস্তা অবরোধ করেছে। কিছু কাশ্মীরি পন্ডিতদের ট্রানজিট ক্যাম্পের সামনে বৈদ্যুতিক বেড়ার মতো দেয়াল (বৈদ্যুতিক তার দিয়ে) তৈরি করা হয়েছে। যাতে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের অভিবাসন থেকে বিরত রাখা যায়। 

শনিবার হিন্দি গণমাধ্যম ‘জনসত্তা’সূত্রে প্রকাশ, যেহেতু একমাসে সেখানে নয়জন হিন্দু নিহত হয়েছে, সেজন্য সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণেই ভয়, একাকীত্ব এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সাথে অ-কাশ্মীরিরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন।

এদিকে, কাশ্মীর উপত্যকায় হিন্দুদের টার্গেট করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে উপত্যকার গ্র্যান্ড মুফতি নাসির-উল-ইসলাম বলেছেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড দুঃখজনক। পাশাপাশি তিনি কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা না ছেড়ে যাওয়ার এবং এখানে থাকার আবেদন জানিয়েছেন।

গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'প্রত্যেকটি হত্যাই দুঃখজনক এবং জঘন্য অপরাধ। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে আমি ব্যথিত। আমি চাই লোকেরা বুঝুক যে আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে হবে। দুর্বৃত্তদের অবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে দেওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, শুধু ইসলাম নয় বিশ্বের প্রতিটি ধর্মই মানবতার শিক্ষা দেয়। যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে সেই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। রক্তপাত মানবতা বিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন গ্র্যান্ড মুফতি নাসির-উল-ইসলাম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়