ইমরুল শাহেদ: গত কয়েক মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকায় বেছে বেছে পণ্ডিত ও হিন্দুদের হত্যার কৌশল নিয়েছে জঙ্গিরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ প্যাকেজে কাশ্মিরে চাকরি পাওয়া প্রায় চার হাজার হিন্দু হুমকি দিয়েছেন, সরকার যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে তারা কাশ্মির ছেড়ে চলে যাবেন। নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে দাঁড় করিয়ে এমন হুমকি তাদের। আনন্দবাজার
জম্মু-কাশ্মীরের হিন্দু ও পন্ডিতেরা যাতে উপত্যকা ত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য পুনর্বাসন শিবিরগুলোর সামনে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যারিকেড তৈরি করেছে। কেন্দ্র শাসিত এ অঞ্চল নিয়ে প্রশাসন তথা নিরাপত্তাবাহিনীর প্রতি নির্দেশ হলো প্রয়োজনে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মরত হিন্দুদের জেলা সদরে বদলি করে নিয়ে আসা যেতে পারে। বিজেপি মনে করছে, কেন্দ্রে তাদের সরকার থাকা সত্ত্বেও পণ্ডিতদের উপত্যকা ছাড়তে হলে দেশে ও দেশের বাইরে বদনাম হবে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। এ দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জঙ্গি দমন অভিযান আরও তীব্র করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই উপত্যকায় বেছে বেছে পণ্ডিত ও হিন্দুদের হত্যার কৌশল নিয়েছে জঙ্গিরা। ঘটনায় তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে উপত্যকায় বসবাসকারী হিন্দুদের মধ্যে। শনিবারও শোপিয়ানের অগলর এলাকায় জঙ্গিদের গ্রেনেডে দু’জন পরিযায়ী শ্রমিক আহত হয়েছে। কাশ্মীরে বসবাসকারী হিন্দুদের একাংশ নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় পালিয়ে গিয়েছেন বা যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। পণ্ডিতদের দলবদ্ধ ভাবে এলাকা ত্যাগ রাজনৈতিক ভাবে বিপাকে ফেলেছে মোদি সরকারকে। কাশ্মীরের হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে মোদী সরকার ব্যর্থ হয়েছে, এই প্রশ্নে বিরোধীরা তো বটেই, সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। হিন্দুদের নিরাপত্তা না দিতে পারায় অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফাও দাবি করেছেন তিনি। কংগ্রেসের বক্তব্য, সিনেমা দেখে সময় নষ্ট না করে আরও আগেই মাঠে নামা উচিত ছিল শাহের। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নীরব কেন, সে প্রশ্নও তুলেছে কংগ্রেস।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৌশল ঠিক করতে শনিবার বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে, র’ প্রধান সামন্ত গোয়েল, গোয়েন্দা প্রধান অরবিন্দ কুমার। ছিলেন সিআরপিএফ এবং বিএসএফ প্রধানও। একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন অমিত শাহ। কেন বারবার সরকারের মুখ পুড়ছে, তা নিয়ে কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়। এ মাসের শেষে শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। তার আগে যে কোনও মূল্যে উপত্যকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপরে জোর দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কাশ্মীর প্রশ্নে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে নর্থ ব্লকে।
আপনার মতামত লিখুন :