মাজহার মিচেল: ঢাকায় অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের রিজিওনাল কমিটি ফর দ্যি সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশানের (আইওসি ইন্দো) ৯ম সভায় তাদের পক্ষ থেকে কেউ আসেননি।
সভা শুরুর আগে ঢাকায় তাদের একটি দল পাঠানোর বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করলেও বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) মিয়ানমারের চেয়ার ফাঁকা রেখেই শেষ হয়।
প্রতিনিধিদলের তালিকা পাঠানো এবং ফ্লাইট প্ল্যান পাঠানোর পরও মিয়ানমারের সভায় যোগ না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সভার সভাপতি পররাষ্ট্র সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমরা মিয়ানমারকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। তাদের না আসার কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানা নেই।
তিনি তাদের না আসাকে হালকাভাবে নিয়ে বলেন, হয়ত সমুদ্র সংক্রান্ত সায়েন্টিফিক লোকজন নেই তাদের। এখানে অংশগ্রহণ করে তারা কী করবে? সাধারণ লোকজন পাঠিয়ে-তো কোন লাভ নেই।
মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়টিকে সভার সভাপতি হালকা করে দেখলেও কুটনৈতিকরা হালকা করে দেখছেন না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আমাদের নতুন সময়কে বলেন, তাদের না আসার পিছনে কয়েকটা কারণ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান কারণটা হলো আমাদের দেশের রোহিঙ্গা ইস্যু। এছাড়াও তো বার্মা এ্যাক্ট রয়েছেই। এর কারণে তারা আন্তর্জাতিক প্রচুর চাপে আছে।
অপরদিকে, তাদের আভ্যন্তরিন গণতন্ত্রের আস্থিরতাকেও বড় করে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক রনি বসাক আমাদের নতুন সময়কে বলেন, মিয়ানমার সবসময়ই আন্তর্জাতিক চাপকে আমলে না নেওয়ার ভান করে থাকে। এটি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হওয়ায় এব্যাপারে তারা নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে সম্মেলনে যোগ দেননি, এমনটাই মনে করছেন এ বিশ্লেষক।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সভায় মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল যোগ দিলে সেটি বাংলাদেশের জন্য সুফল হতো।
উল্লেখ্য, ময়ানমার ছাড়াও আরও তিন সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও ওমানও কোনো প্রতিনিধি দল পাঠায়নি।
বাকি তিন সদস্য যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব ও ওমানের না আসার কারণ হিসেবে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব জানান, দেশগুলোর অন্য কমিটমেন্ট ছিল। তাই তারা আসতে পারেনি। সভায় ১৮টি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেসহ ১৪টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল যোগ দিয়েছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :