শিরোনাম
◈ বিএনপির বিশৃঙ্খলা রোধে তারেক রহমানের যত ‘স্মার্ট অ্যাকশন’ ◈ ভারতে শেখ হাসিনা আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন দালাই লামার মতোই! ◈ কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের নিউজ কোথায়, প্রশ্ন আওয়ামী লীগের ◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত বেশ কয়েকজন, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের ◈ অস্বস্তিকর গরম: অবসান হবে কবে? জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:৩৫ বিকাল
আপডেট : ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:৩৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আসিয়ান সম্মেলনে শি’র কাছে দ্বন্দ্ব অবসানের আহবান জানালেন বাইডেন 

রাশিদুল ইসলাম: তাইওয়ান ও ইউক্রেন সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন ও চীনা নেতারা তাদের প্রথম মুখোমুখি শীর্ষ বৈঠকে বসেন। দুই নেতা হাস্যোজ¦ল অবস্থায় একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করেন। এসময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা ঝলসে ওঠে। এক ফ্রেমে বন্দি হলেন সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দুই নেতা। এ ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে চরম তিক্ততা চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের নেতা শি জিনপিং-এর সাথে এই প্রথম বৈঠক করলেন। তাদের এ বৈঠকে দুটি দেশের মধ্যেকার গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলো আলোচনা হয়। সিএনএন

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এই আলোচনা হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে বিশ্ব নেতারা জলবায়ু পরিবর্তন থেকে মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধির মত বৈশ্বিক সমস্যাগুলিকে সামাল দেওয়ার জন্যে এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।  প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও শির জন্য, এ সম্মেলন দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কে উন্নতি করার একটি বিরল সুযোগ এনে দেয়।

শি ও বাইডেন মনে করেন বিশে^ সংঘাতময় অবস্থা কেটে যাবে। জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘সংঘাত’কে এড়িয়ে যাওয়ার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের আলোচনায় শীর্ষ এজেন্ডা ছিল তাইওয়ান। দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। কিন্তু তাইওয়ান তা মানে না। তারা নিজেদেরকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে। দেশটিকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে চীন প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে তাইওয়ান আক্রান্ত হলে পাশে থাকবে তারা। এ জন্য ওই অঞ্চলে ও এর আশপাশে যুক্তরাষ্ট্র তার শক্তি বৃদ্ধি করেছে। বৈঠকের আগে বাইডেন বলেছেন, দুই নেতা তাইওয়ান ইস্যুতে রেড লাইন বা প্রত্যেকের জন্য সীমারেখা নির্ধারণ করবে। 

সোমবার বাইডেন-শি’র মুখোমুখি বৈঠকে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে বরফ জমেছিল তা হয়ত কিছুটা গলতে শুরু করল কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কতটা গলবে- সময়ই বলে দেবে। দুই দেশের মধ্যে বিরোধ কমপক্ষে এক দশক আগে থেকে। চীন ক্ষতিকর বাণিজ্য চর্চা করছে বলে ওয়াশিংটনের অভিযোগ। তারা পরিষ্কার করে বলেছে, চীন এমন সব ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম তৈরি করে, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য চুরি করা সম্ভব। দুই নেতার বৈঠকে শি জিনপিংয়ের প্রশাসন চীনের উদীয়মান প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর বিধিনিষেধের বিষয় উত্থাপন করতে পারেন। এসব ইস্যুতে যদি প্রতিবন্ধকতা উঠে যায়, তাহলে পর্যবেক্ষকদের কাছে তা হবে এক স্মৃতিবিজড়িত এক বিস্ময়কর ঘটনা। 

এর আগে ওয়াশিংটন ইউক্রেন সংকটে নিরপেক্ষ থাকার পরিবর্তে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অভিযানে পশ্চিমাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য বেইজিংকে অনুরোধ করে ব্যর্থ হয়েছে। উল্টো চীন তাইওয়ানের উপর তার সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে এমন পদক্ষেপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারী দিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি চীনের সতর্কতা সত্ত্বেও তাইপেইতে একটি বিতর্কিত সফর করার পরে, চীন আগস্টে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক ও জলবায়ু সম্পর্ক ছিন্ন করে।  
রোববার কম্বোডিয়ার নম পেনে সাংবাদিকদের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘সরল’ আলোচনার লক্ষ্য নিয়েছিলেন। আমাদের মাঝে খুব কম ভুল বোঝাবুঝি আছে। চীনা নেতার সাথে তার অতীতের কথোপকথন সম্পর্কে এমন মন্তব্য করে বাইডেন আরো বলেন, আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে শেষ সীমা বা ‘রেড লাইন’গুলো কী তা খুঁজে বের করতে হবে। 

চীনের জন্য, তাইওয়ান স্পষ্টতই সেই লাল রেখাগুলির মধ্যে একটি। বেইজিং তাইওয়ানকে পুনঃসংহত করতে চায়, বিশেষ করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে। গত মাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে শি বলেছেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প সংরক্ষণ করি। এটি শুধুমাত্র বহিরাগত শক্তি এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতা চাওয়া কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হস্তক্ষেপে পরিচালিত হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ চেয়ারম্যান মার্ক মিলি বুধবার তাইওয়ানের সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি চীনের বিরুদ্ধে ‘বৈশ্বিক সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব’ অর্জন চেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন। পেন্টাগন গত মাসে বলেছিল যে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি রয়ে গেছে।

এদিকে চীনা কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘সেকেলে শীতল যুদ্ধের মানসিকতা’র জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং উভয় পক্ষ লাভবান হয় এমন সহযোগিতার আহ্বান জানান। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান এই মাসের শুরুতে অভিযোগ করেন মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ‘আধিপত্য ও আধিপত্যবাদের যুক্তি দ্বারা চালিত এবং বিভিন্ন মিথ্যা অজুহাতে চীনকে ধারণ ও দমন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সংঘাত ঠেকাতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগের পথ খোলা থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং দেশটির মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে কথা বলবে। তবে তিনি তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তির গুরুত্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। 

বাইডেন ইউক্রেনে রাশিয়ার নিষ্ঠুর ও অন্যায় আক্রমণ এবং উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার হুমকির নিন্দা জানান। তিনি মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের আসিয়ানের শান্তির পরিকল্পনা অনুসরণ করার আহ্বানও জানান। আসিয়ান সম্মেলনে বিশ্বের ১৮টি দেশের নেতারা অংশ নিয়েছেন। এতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশের নেতারা যোগ দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়