শিরোনাম
◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের ◈ অস্বস্তিকর গরম: অবসান হবে কবে? জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট, ভারত থামলো ৩৭৬ রানে ◈ অস্ট্রেলিয়ার তা-বে উড়ে গেলো ইংল্যান্ড  ◈ নারী দলের লঙ্কান কোচকে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ০৪:৪১ দুপুর
আপডেট : ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ০৬:১৫ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বলপ্রয়োগ করবে চীন, জবরদস্তি ও আগ্রাসনের চিন্তা বাদ দিতে বলল তাইওয়ান

রাশিদুল ইসলাম: চীন বলেছে, দেশটির মূল ভূখণ্ডে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে একত্রিত করার সকল প্রচেষ্টা চালাবে বেইজিং। কিন্তু যদি সে প্রচেষ্টা সফল না হয় তাহলে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী শক্তির পাশাপাশি তাদের বিদেশি পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজন বলপ্রয়োগ করা হবে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র সুন ইয়েলি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বেইজিং-এ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানকে একত্রিত করতে বলপ্রয়োগ করার অধিকার বেইজিং সংরক্ষণ করে। সিএনএন/প্রেসটিভি/আরটি

এদিকে তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল, ক্রস-স্ট্রেট বিষয়গুলি পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট একটি সরকারি সংস্থা, রোবাবার রবিবার শি জিনপিংয়ের বক্তৃতার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে যে বেইজিংয়ের উচিত  ‘তার জবরদস্তি ও আগ্রাসন ত্যাগ করা উচিত। যদিও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, তখনও তাইওয়ানের প্রতি তার নীতিতে এখনও নতুন চিন্তাধারা বা সঠিক বিচার নেই। কাউন্সিল একটি বিবৃতিতে আরো বলেন, বেইজিংকে অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে। চাপিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক কাঠামো এবং জবরদস্তি ও আগ্রাসনের কাজ, এবং সার্বভৌমত্ব, গণতান্ত্রিক এবং স্বাধীনতার প্রতি তাইওয়ানের জনগণের জেদকে সম্মান করে। যৌক্তিকতা, সমতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার সাথে শান্তিপূর্ণভাবে এবং বাস্তবসম্মতভাবে পার্থক্যগুলি মোকাবেলা করার মাধ্যমেই আমরা ইতিবাচক ক্রস-স্ট্রেট মিথস্ক্রিয়া পুনরায় শুরু করার ভিত্তি তৈরি করতে পারি।’

চীনের ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র আরো বলেন, তাইওয়ানের কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতায় জড়িত এবং তাদের পাশাপাশি বহির্বিশ্বে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে শক্তি ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি বেইজিং দিতে পারছে না। তিনি বলেন, চীন তাইওয়ানের জনগণের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেবে না; কারণ, এই দ্বীপকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে মূল ভূখণ্ডে একত্রিত করতে চায় বেইজিং। এদিকে তাইওয়ানের কাউন্সিল আরো বলেছে, যখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ‘জাতীয় পুনরুজ্জীবন’ এর দীর্ঘকালের মূল লক্ষ্যের উপর জোর দিয়েছে, এটি কখনই সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সংস্কার গ্রহণ করেনি, একটি মুক্ত নাগরিক সমাজ গড়ে তোলেনি বা একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ক্রস-স্ট্রেট সম্পর্কের মুখোমুখি হয়নি।

এদিকে সিএনএন এক বিশ্লেষণে বলেছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যসংখ্যা ৯ কোটি ৬৭ লাখ। দলটির কংগ্রেস সাধারণত অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেসে পুরো দেশ থেকে ২ হাজার ২৯৬ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। প্রতিনিধিরা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৪ জন সদস্য বাছাই করবেন। কেন্দ্রীয় কমিটি পরে ২৫ সদস্যের পলিটব্যুরো নির্বাচন করবেন। পলিটব্যুরো থেকে হবে ৭ সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটি। চীনের সর্বসময় ক্ষমতার অধিকারী এই কমিটি। কেন্দ্রীয় কমিটি দলের সর্বোচ্চ নেতা বা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। কংগ্রেসের ধারাবাহিকতায় দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবার শি জিনপিং’র নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

সিএনএন বলছে, নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সি ২০১৭ সালের মতো এবারও শীর্ষ নেতাদের এই দলকে আনুষ্ঠানিকতায় নেতৃত্ব দিতে পারেন। নতুন স্ট্যান্ডিং কমিটির অন্য সদস্যদের তিনি পরিচয় করিয়ে দেবেন। এই আনুষ্ঠানিকতা চীনের জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে। কারা স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হলেন সেদিকে নজর থাকবে চীনা পর্যবেক্ষকদের। কারণ, শি’র নিরঙ্কুশ ক্ষমতা আছে নাকি তিনি কোনো ছাড় দিয়েছেন, তা এই কমিটি দেখে বোঝা যাবে। একই সঙ্গে এই কমিটির মধ্যেই একজন সম্ভাব্য উত্তরসূরি খুঁজবেন পর্যবেক্ষকেরা। শি কত দিন শাসন করতে চান, সে বিষয়ে একটি সূত্র দিতে পারে এই কমিটি। দলের কংগ্রেসের সময়ে ৬৮ বছর বা তার বেশি বয়সী জ্যেষ্ঠ নেতারা অবসর নেবেন। শি’র বয়স এখন ৬৯ বছর। তিনি ক্ষমতায় থাকার মাধ্যমে নিয়মটিকে ভাঙতে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পলিটব্যুরোর অন্য সদস্যদের এই ছাড় তিনি দেবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।

এক চীন নীতির আওতায় তাইওয়ানকে নিজের অংশ বলে মনে করে বেইজিং।  জাতিসংঘও এ বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মার্কিন সরকারও ১৯৭৯ সনে এক চীন নীতি মেনে নিয়ে তাইওয়ানকে একটি পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। সেই থেকে চীনের ঘরোয়া বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের উপর্যুপরি হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মার্কিন সরকারগুলো নানা আঞ্চলিক জোট গঠনের মাধ্যমে চীনকে কোণঠাসা করার ও তাইওয়ানে হস্তক্ষেপ বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং তাইওয়ানের সঙ্গে স্বাধীন রাষ্ট্রের মত আচরণ করছে।  সম্প্রতি ওয়াশিংটন তাইওয়ানের কাছে ১১০ কোটি ডলার মূল্যের সমরাস্ত্র বিক্রি করবে বলে জানিয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়