ইমরুল শাহেদ: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সাধারণ মানুষ রোহিঙ্গাদের ঘটনার পর আবারও জান্তা বাহিনীর লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে গত কয়েকদিন থেকেই অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করতে শুরু করেছে। নিজ নাগরিকদের হত্যার এমন ঘটনা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কদাচিৎই দেখা যায়। রাখাইনের সাধারণ নাগরিকরা গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেছেন, গভীর রাতে বন্দুকের গর্জন তাদের ঘুম বিনষ্টের পাশাপাশি নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা অনিশ্চিত করে দিচ্ছে।
পশ্চিম মিয়ানমারের রাজ্য রাখাইনের বাসিন্দা বু ওয়াইন বলেছেন, তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপদ স্থানে যেতে চান। কিন্তু মিয়ানমারের কোথায় যাবেন? মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ স্থান কোথায় আছে? তিনি বলেন, গভীর রাতে এসব কথা ভাবার সময় তাদের বাঁশের ঘরের কোণায় এসে পড়ে একটি শেল। তার চোখমুখ অন্ধকার হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘যখন চোখ মুছে কোনো রকমে তাকালাম তখন দেখি আমার ছোট ছেলেটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।’ ভয়াবহ শেলিংয়ের কারণে পরিবারটি তাদের সন্তানকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে পারেননি। শেলিংয়ের পাঁচ দিন পর সেনাবাহিনী তাদের গ্রামটি ঘেরাও করে। কিন্তু ইতোমধ্যে গ্রামের বাসিন্দারা সব কায়াকতু শহরে চলে যান।
রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও জান্তা সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার দুই মাসের মধ্যে চৌদ্দ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন। এই অঞ্চলটি ছিল রোহিঙ্গা অধ্যুষিত। তাদেরকে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে জান্তারা। এজন্য মিয়ানমার এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যার মামলা মোকাবিলা করছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘ প্রতিনিধি বলেছেন, রাখাইনের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কারণ সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে ১৭ হাজার ৪০০ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারণে সেখানে মানবিক সহায়তা দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
আইএস/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :