শিরোনাম
◈ দিল্লিতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার রুপিতে ! ◈ খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা-সংঘর্ষ, গুলি (ভিডিও) ◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২২, ০১:৪২ রাত
আপডেট : ২১ আগস্ট, ২০২২, ০১:৪২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তুরস্কের মসজিদের শহর কোনিয়া

ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক: মসজিদের শহর বলা হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে। এই শহরের অলিগলিতে মসজিদের উপস্থিতিই দিয়েছে এই খেতাব। তবে যেভাবে ক্রমাগত মসজিদ নির্মিত হচ্ছে তুরস্কের কোনিয়া শহরে, হয়তো এক সময় তারাও নিতে পারে মসজিদের শহরের উপাধি। শহরটিতে একটু পরপরই চোখে পড়বে মসজিদ। কোনোটি বড় আবার কোনোটি ছোট। তবে প্রায় সব মসজিদই একই ধরনের। এটা তুর্কি স্থাপত্যের একটি ঐতিহ্য।

এবার পঞ্চম ইসলামী সলিডারিটি গেমসের স্বাগতিক ছিল এই কোনিয়া। ৫৪টি মুসলিম দেশের সাড়ে চার হাজার ক্রীড়াবিদের মিলনমেলায় পরিণত হয় এই শহর। তুরস্কের মধ্যবর্তী অঞ্চলের শহর এটি। কোনিয়া এক সময় ছিল তুরস্কের রাজধানী। তা সেলজুক শাসনামলে। উসমানীয় শাসনামলে রাজধানী কোনিয়া থেকে স্থানান্তরিত হয় ইস্তাম্বুলে। পরে আংকারা পায় রাজধানীর খেতাব। বর্তমানে দেশটির সপ্তম বৃহত্তম শহর কোনিয়া। বড় বড় শিল্প কারখানার জন্য বিখ্যাত এই শহর। সাথে শস্য উৎপাদনের জন্যও।

বিখ্যাত তুর্কি নাগরিক মাওলানা নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, মাওলানা জালালউদ্দিন রুমির শহর এই কোনিয়া। জালালউদ্দির রুমির কবরের পাশেই ১৫০০ শতাব্দীতে নির্মিত বিশাল আকারের সুলতান সেলিম মসজিদ। পুরোপুরি ইউরোপীয় বিভিন্ন শহরের আদলে গড়া এই কোনিয়া। পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন, ফুল গাছ আর ফলদ ও বনজ গাছে পরিপূর্ণ এই শহর। রয়েছে কোনিয়া থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত দ্রুতগতির ট্রেন সার্ভিস। শহরে অত্যাধুনিক সড়ক ব্যবস্থাপনা। ফ্লাইওভারের সাথে মেট্রো-ট্রাম সব কিছুরই উপস্থিতি। এবারের ইসলামী সলিডারিটি গেমসের ভেন্যু ছিল কোনিয়া শহরের বিভিন্ন প্রান্তজুড়ে। মাইলের পর মাইল সড়ক আর মেট্রোতে চড়েই দেখার সুযোগ এই শহর। বেশ প্রশস্ত রাস্তার এক পাশে সাইকেল লেন। সাথেই হাঁটার রাস্তা বা ফুটপাথ। কোথাও ময়লা আবর্জনার নোংরা ডাস্টবিন নেই।


পুরো শহরে বহুতল ভবনের সংখ্যা কমই। অন্য যে সব বাড়ি বা ভবন আছে তা সবই প্রায় একই ডিজাইনের। আর একটু পরপরই মসজিদের উপস্থিতি। এক কিলোমিটার পরপরই মসজিদ চোখে পড়ে। লক্ষণীয় বিষয় প্রতিটি মসজিদেই মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা আছে। আর অজু খানার ওপর একটি ছোট গম্বুজ এবং ছাদ ঢাকা খোলা অজু করার জায়গা। মসজিদগুলোর কোনোটিতে একটি মিনার। আবার কোনোটিতে চারটি। কোনোটিতে একটি গম্বুজ। কোনোটিতে ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক। প্রতিটি মিনারের ওপর চাঁদ খচিত। সুলতান সেলিম মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার সময় হাফ প্যান্ট পরে (হাঁটু সমান নামানো) কয়েক যুবককে পাওয়া গেল। তারাও দাঁড়িয়ে গেল নামাজে। দূরের উঁচু পাহাড়ে বহুতল ভবনের সারি করে সেখানে নতুন শহর তৈরি করা হচ্ছে। সেখানেই একাধিক মসজিদ আছে।

অবশ্য কোনিয়ায় পর্দা পরা মেয়েদের পাশাপাশি পশ্চিমা সংস্কৃতির খোলামেলা পোশাক পরা নারীরও দেখা মেলে। লক্ষণীয় বিষয় বোরকা ও হিজাব পরা মহিলারা রাস্তায় প্রকাশ্যে ধূমপান করে। কিছু মহিলা একেবারে পুরো শরীর ঢেকে (মুখও দেখা যায় না) রাস্তায় বের হন। তবে পরস্পরের সাথে দেখা হলেই তুর্কি মুসলানদের প্রথম বাক্য শুরু হয় সালাম দিয়ে। আমাদের মতো আসসালামু আলাইকুম না বলে ওদের মুখ থেকে বের হয় সালামালাইকুম। আর খুশির কথা শুনলেই বলে মাশাআল্লাহ।


ন্যাড়া পাহাড়ে ঘেরা কোনিয়া শহর। এক সময় এই শহরে ছিল রোমান খ্রিষ্টান, গ্রিক বাইজেন্টাইনদের শাসন। পরে মুসলমানরা তাদের হটিয়ে দেয়। কোনিয়া শহরের যে অংশ এবার ইসলামী সলিডারিটি গেমসের ভেনু ভিলেজ ছিল তা ৩০-৪০ বছর আগে গড়ে তোলা হয়েছে। শহরের এক প্রান্তে বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়ের এরদোগানের একে পার্টির অফিস দেখা গেল। তার ছবি আর দল ও তুরস্কের পতাকা উড়ানো অফিসটি। এই কাজটি করা হয়েছে ঠিক বাংলাদেশী রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস সাজানোর মতো। তবে পোস্টারে ভরে দেয়নি।

আফগানিস্তানের বলখ প্রদেশে জন্ম হলেও বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, সিরিয়া হয়ে কোনিয়ায় মারা যান। মাওলানাকে তুর্কিরা মাভলানা বলে। কোনিয়াতে যেখানে জালালউদ্দিন রুমির কবর সেই স্থানটি মাভলানা নামেই পরিচিত। মেট্্েরা স্টেশনের নামও রাখা হয়েছে মাভলানা নামে। তুর্কি খাবারে তিলের উপস্থিতি বেশি। পিঠা পুলিতো আছেই। তিলের তেলে রান্নার সাথে তিলের তৈরি স্যুপও পাওয়া যায়। সাথে ভেড়া, গরু, মুরগির গোশতও তাদের খাবারের উপাদান। বাহারি মিস্টি তৈরি হয় এই কোনিয়াতে।

সূত্র: নয়া দিগন্ত

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়