ইমরুল শাহেদ: তিব্বতী ধর্মগুরু দলাই লামাকে ‘ভারতরত্ন’ উপাধি দেওয়ার দাবি নিয়ে অল পার্টি ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর তিব্বত নরেন্দ্র মোদি সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। তাদের প্রস্তাব, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া ৮৭ বছর বয়সি এই ভারতপ্রেমীকে সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দিয়েও সম্মানিত করা হোক। দি ওয়াল
এই ফোরামে শাসক দল বিজেপি-সহ ২০টির বেশি দলের সাংসদেরা রয়েছেন। তবে অনেক বছর ফোরামের সক্রিয় কাজকর্ম বন্ধ ছিল। গত বছর ফোরামের পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়। নির্বাসিত তিব্বতীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সঙ্গে চীন ফোরামের কার্যকলাপ নিয়ে সরব হয়। কারণ, ফোরামের প্রধানের লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা তিব্বতীদের স্বার্থ রক্ষা।
দলাই লামা ১৯৫৯ সাল থেকে ভারতের বাসিন্দা। সে বছর তিনি ও তার শিষ্যরা চীন অধিকৃত তিব্বত থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু উদ্যোগ নিয়ে তাকে এ দেশে পাকাপাকিভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। তার ধর্মীয় নাম তেনজিং গিয়াতসো। তিনি হলেন চতুর্দশ দলাই লামা। তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম অনুযায়ী ‘দলাই লামা’ অর্থ, মহাসাগরতুল্য শিক্ষক বা গুরু, যারা বিভিন্ন শরীরে জন্মগ্রহণ করছেন মাত্র। তাই চতুর্দশ দলাই লামা পূর্বজন্মে ছিলেন ত্রয়োদশ, ত্রয়োদশ ছিলেন দ্বাদশ, এইভাবে। অর্থাৎ যা এক বিশেষ অবিচ্ছেদ্য পরম্পরা।
ফোরামের আহ্বায়ক রাজ্যসভার বিজেডি পার্লামেন্ট সদস্য সুজিত কুমার। তিনি বলেন, আমরা একটি স্বাধীন দেশের নির্বাচিত পার্লামেনট সদস্য। ফোরামের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলাই লামাকে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক উপাধি দেওয়া হোক।
ফোরামের বৈঠকে বিজেপি নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে দলাই লামাকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ফোরাম লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে অনুরোধ করবে দলাই লামাকে সেন্ট্রাল হলে পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে।
আর এক বিজেপি পার্লামেন্ট সদস্য অরুণাচল প্রদেশের তাপির গাও প্রস্তাব দেন, তিব্বতের সমর্থনে ফোরাম একটি বড় সমাবেশের আয়োজন করুক, যা তিব্বত ইস্যুতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দলাই লামাকে ‘ভারতরত্ন’ উপাধি দেওয়ার প্রস্তাবটি করেন সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের রাজ্যসভার পার্লামেন্ট হিশে লাচুংপা। ফোরামের সদস্যরা ২ সেপ্টেম্বর তিব্বতীয় গণতন্ত্র দিবস এবং ৭-১৬ সেপ্টেম্বর নির্বাসিত তিব্বতীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :