রাশিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ২০২০ সালের মার্চে ক্ষমতায় থাকাকালীন স্বাস্থ্য, অর্থ ও সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে একটি গোপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এ বিষয়ে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ পত্রিকায় গত রোববার এ তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর দেশটিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। কারণ এই প্রক্রিয়ার কোনোটিই অস্ট্রেলিয়ার জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয়নি। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্টকে এক সপ্তাহ পর অবহিত করা হলেও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ম্যাথিয়াস কোরম্যান এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। সিএনএন

অস্ট্রেলিয়অর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন, স্কট মরিসনকে করোনা মহামারি চলাকালে গোপনে অন্তত ৫টি পোর্টফোলিওতে নিযুক্ত করা হয়েছিল। এগুলো হচ্ছে শিল্প, বিজ্ঞান, শক্তি ও সম্পদ, স্বরাষ্ট্র ও অর্থ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এমন কার্যক্রম সত্যিই আমাদের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। আমাদের গণতন্ত্র মূল্যবান এবং এটি জবাবদিহিতার ওপর নির্ভর করে।’

বিগত প্রশাসনকে ‘প্রতারণার সরকার’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্রিফিং পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মরিসন সরকারের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রে একটি অভূতপূর্ব ও নজিরবিহীন আবর্জনাময় ঘটনা ঘটেছে।’ পোর্টফোলিওগুলোর কারণে সংসদকে বিভ্রান্ত করার জন্য মরিসনককে অভিযুক্ত করেন তিনি।

বিগত জোট সরকারের একাধিক মন্ত্রী দাবি করেছেন, তারা এই নিয়োগ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারেন অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমার পোর্টফোলিওতে নিজে শপথ করেছেন, এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। একজন প্রধানমন্ত্রীর এমন আচরণ সবকিছুকে দুর্বল করে। ফেডারেল সরকারের উচিত সাংবিধানিকভাবে এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলও এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘স্কট মরিসনের গোপনে ৫টি পোর্টফোলিওতে শপথ নেওয়া অশুভ এবং অবিশ্বাস্য।’ এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘এটা উদ্বেগের যে একজন প্রধানমন্ত্রী, একজন অ্যাটর্নি জেনারেল, গভর্নর জেনারেল এবং দৃশ্যত তাদের কর্মকর্তারা মরিসনের অশুভ গোপন রাষ্ট্রীয় নিয়োগগুলোকে বৈধ বলে মনে করেছিলেন।’

গোপনে মন্ত্রিত্ব নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার ২ দিন পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন স্কট মরিসন। এ সময় তিনি তার সহকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান। মরিসন মঙ্গলবার বেন ফোর্ডহ্যামের একটি রেডিও শোতে কল করে স্বীকার করেন যে সাবেক অর্থমন্ত্রী ম্যাথিয়াস কোরম্যানকে না বলে গোপনে নিজেকে তার পোর্টফোলিওতে নিয়োগ করা একটি ‘ভুল’ ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে মরিসন বলেছেন, ‘তখন আমরা বেশ খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছিলাম এবং ফলস্বরূপ আমাদেরকে সুরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখতে কিছু অসাধারণ ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল।’