ইমরুল শাহেদ: সমুদ্র ও আকাশপথে তাইওয়ানকে ঘিরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা ‘অভূতপূর্ব’ ও ‘নজিরবিহীন’ সামরিক মহড়া বৃহস্পতিবার শেষ করেছে চীন। তবে সেই সঙ্গেই শি জিনপিংয়ের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল, তাইওয়ান ভূখণ্ডে কোনও ধরনের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম’ তারা মেনে নেবে না। প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে গোটা ভূখণ্ড দখল করবে তারা। এর মানে তাইওয়ানে সেনা না পাঠানোর প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এলো চীন। আনন্দবাজার
বৃহস্পতিবার তাইওয়ান নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে চীন। ২০০০ সালের পরে এই প্রথম স্বশাসিত এই ভূখণ্ড নিয়ে কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করল চীনের সরকার। যেখানে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে, প্রয়োজনে তাইওয়ান অধিগ্রহণ করার পরে সেখানে সামরিক বাহিনী পাঠাবে তারা। এর আগে শ্বেতপত্রে চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, হংকংয়ের মতো তাইওয়ানের ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ মেনে চলবে তারা। অর্থাৎ কোনও দিন চীনের সঙ্গে তাইওয়ানকে জোড়া হলেও সেখানে স্বশাসিত সরকার থাকবে এবং চীনের কোনও সামরিক বাহিনী তাওইয়ান ভূখণ্ডে ঢুকবে না। কিন্তু মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর থেকেই সেই সমীকরণ পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্পষ্ট ভাবেই ওই শ্বেতপত্রের মাধ্যমে বেইজিং জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে পুনর্মিলনে বিশ্বাসী। তবে তাইওয়ানের ভিতরে তৃতীয় পক্ষের কোনও ধরনের উস্কানি বা বিচ্ছিন্নতবাদী আচরণ তারা বরদাস্ত করবে না। তবে চীনের সরকার সেই সঙ্গেই বলেছে, ‘প্ররোচনায় আমরা বলপ্রয়োগ পুরোপুরি ত্যাগ করতে পারব না। এবং সব রকম ভাবে প্রত্যাঘাতের জন্য তৈরি থাকব।’ বেইজিংয়ের আরও বক্তব্য, নিজেদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে সব রকম প্রস্তুতি তারা সেরে রাখছে।
তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়ার বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করলেও চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের তরফে জানানো হয়েছে তাইওয়ান ভূখণ্ড আর তার আশপাশের এলাকায় ভবিষ্যতেও কড়া নজরদারি জারি রাখবে তারা। চলবে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণমূলক কার্যকলাপও।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, তাইওয়ান প্রণালীতে মধ্যরেখা (দু’পক্ষের বিভাজন রেখা) অতিক্রম করে বৃহস্পতিবারও অন্তত ১৭টি চীনা যুদ্ধবিমানকে চক্কর দিতে দেখা গিয়েছে। তাইওয়ান উপক‚লের কাছে দেখা গেছে চীনা রণতরীরও। তবে চীনের হুমকির মুখে তারা মাথা নত করবে না বলে আবারও বার্তা দিয়েছে তাইওয়ান সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সান লি-ফাং বলেছেন, ‘প্রস্তুতি আমরাও সেরে রাখছি। শত্রু পক্ষের হামলার কথা ভেবে আমরাও সেই মতো উপযুক্ত জায়গায় নিজেদের বাহিনী মোতায়েন করছি।’
আপনার মতামত লিখুন :