জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে, কাউকে ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে জানা গেছে, কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত সরকার। সূত্র: দ্য ওয়াল, দ্য ডন
কাশ্মীরের হামলার ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে নিজেদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছে পাকিস্তান। কিন্তু তারপরও ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে পাঁচ বড় পদক্ষেপ নিয়েছে মোদি সরকার।
যেসব পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়েছে
সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মধ্যে এটাই সবথেকে বড়। পাকিস্তানের ঝিলম, চেনাব, রবি, বিয়াস এবং সাতলুজ নদীগুলো সিন্ধু নদের পানির ওপর নির্ভরশীল বলে জানা যায়। এই নদীগুলো থেকেই পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানি পৌঁছায়। তাই সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
আটারি-ওয়াঘা চেকপোস্ট বন্ধ: অনির্দিষ্টকালের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। সম্প্রতি যারা এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ফেরার জন্য ১ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছে মোদি সরকার।
ভিসা বাতিল: পাকিস্তানিদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতোমধ্যে বাতিল করা হয়েছে সমস্ত ‘সার্ক’ ভিসা।
পাক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ: নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের কর্মকর্তাদেরও এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের নিজ দেশে ফেরার নির্দেশও দিয়েছে নয়াদিল্লি। এ-ও স্পষ্ট করা হয়েছে, পাক নাগরিকদের আপাতত আর ভিসা দেয়া হবে না।
হাইকমিশনে কর্মকর্তার সংখ্যা কমানো: ভারতীয় দূতাবাসের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে। ১ মে ২০২৫ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। ইসলামাবাদে উপস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা এবং বিমান উপদেষ্টাকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত।
তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের এমন পদক্ষেপের জবাব দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঘোষণা করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ‘ভারতীয় কর্মকাণ্ডের জবাব দিতে’ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির একটি সভা ডেকেছেন।
রেডিও পাকিস্তানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে ‘পহেলগাম ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের পর ভারতের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড’ নিয়ে বিস্তারিত এবং প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতের ঘোষণাগুলোকে ‘অনুপযুক্ত’ বলেও অভিহিত করেছেন। অনুবাদ: সময়নিউজটিভি।