শিরোনাম
◈ ট্রাম্প-সি-মোদি এসে বাংলাদেশে কিছু করে দিয়ে যাবেন না: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ সরকার কোনোভাবেই কাজ ছাড়া সময় পেতে পারে না: এনসিপি ◈ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্য গ্রেফতার ◈ ‌‘এই নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোত্তম এবং দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি মাইলফলক, ◈ কা‌র্ডিফ সি‌টির বিরু‌দ্ধে হামজা চৌধুরীর শেফিল্ডের দুর্দান্ত জয় ◈ পা‌কিস্তান ক্রিকেট লি‌গে  সর্বোচ্চ উইকেটের ইতিহাস গড়লেন হাসান আলি ◈ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়কে ভূলন্ঠিত করা হয়েছে : অধ্যাপক আলী রীয়াজ  ◈ ‘আ.লীগের মিছিলের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা পেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’ (ভিডিও) ◈ ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি নিয়ে আবারও রাস্তায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ◈ ‘করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবে তৈরি’ বলছে হোয়াইট হাউসের নতুন ওয়েবসাইট 

প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:২০ বিকাল
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পক্ষে ভারতের যুক্তি: ‘আগে বাংলাদেশ কী করেছে, সেটাও দেখতে হবে’

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেছে দিল্লি। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এর আগে বাংলাদেশ কী কী করেছে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখা দরকার।

২০২০ সালে করা এই চুক্তির অধীনে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহণ করতে পারতো। গত সপ্তাহে বাংলাদেশকে দেওয়া সেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। এক বিবৃতি প্রকাশ করে ভারত জানায়, নেপাল এবং ভুটান ছাড়া ভারতের বন্দরগুলি বাংলাদেশকে বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। 

চুক্তির সময় ঠিক করা হয়েছিল, ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহণ করতে পারবে। অর্থাৎ, ভারতের বন্দর নিজেদের বাণিজ্যের কাজে বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারবে। গত সপ্তাহে সেই পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা করেছে ভারত। শুধুমাত্র নেপাল এবং ভুটানে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ বাণিজ্য করতে পারবে।

ভারত এই পদক্ষেপ কেন নিল, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ‘ভারতের বন্দরগুলিতে যানজট তৈরি হচ্ছে। পণ্য পরিবহণ করতে বহু সময় লেগে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ওই জট কাটাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'' রণধীর মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নেপাল-ভুটানে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। অর্থাৎ, ওই দুই দেশে ভারতের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য করতে পারবে বাংলাদেশ। 

রণধীর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও জানিয়েছেন, ভারত চায় বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক সম্পর্ক। আমরা গণতান্ত্রিক, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা বাংলাদেশ গঠনের পাশে আছি।’

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রণধীরের এই বক্তব্য প্রত্যাশিত ছিল। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধের নোটিসেও ভারত এই কথাগুলিই লিখেছিল। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেখানে ঠিক এই কথাগুলিই লেখা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক, সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলা বাংলাদেশের পাশে আছে ভারত। ঈদের বার্তাতেও একই কথা বলা হয়েছিল। সম্প্রতি ব্যাংককে এক সম্মেলনে ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মোদি। সেখানেও ভারতের তরফে এই কথাগুলিই বলা হয়েছিল।

বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে এরপর রণধীর আরেকটি বাক্য বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার ওই বাক্যটি যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ। রণধীর বলেছেন, ‘আমাদের ঘোষণার আগে বাংলাদেশের তরফে কী ঘটেছে, তার দিকেও নজর দিতে হবে।’

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারতের এই ঘোষণার আগে বাংলাদেশ তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ করেছে। বন্ধ করা হয়েছে একটি স্থলবন্দরের কার্যক্রম। ভারত থেকে সুতো আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্তও আগেই নেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, চীনে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ড. ইউনূস। সেই মন্তব্য ভারত খুব ভালো চোখে দেখেনি।

ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘ভারতের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। দুই দেশের মধ্যে যে টানাপড়েন চলছে, তার জেরেই ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তার মতে, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্য এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, 'ভারতের এই সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আরো একটি নজির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে কোনো আপস করেন না। এই পদক্ষেপ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করবে।’

ইন্দো-বাংলা চেম্বার অফ কমার্সের উত্তর-পূর্ব ভারতের সাধারণ সম্পাদক অমরেশ রায়ে বলেছেন, ‘সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা যে মন্তব্য করেছেন, আমরা তা সমর্থন করি না। ফলে ভারতের এই অবস্থানকে আমরা স্বাগত জানাই।’

গত মার্চ মাসেই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতের থেকে সুতো রপ্তানি বন্ধ করা হবে। এর ফলে ভারতের সুতো ব্যবসায়ীদের বড়সড় সমস্যার মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়