যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আবারও বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির (এফএসইউ) টালাহাসি প্রধান ক্যাম্পাসে এক বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বন্দুকধারী নিজেও। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ-প্রধান জেসন ট্রামবোয়ার। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় ও গ্রেপ্তার করে। টালাহাসি পুলিশ-প্রধান লরেন্স রেভেল জানান, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী নির্দেশ মানেননি বিধায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ।
বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দুজন এফএসইউর শিক্ষার্থী ছিলেন না। পুলিশের তথ্যমতে, নিহত ওই দুজন ছাড়া আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এই বন্দুক সহিংসতার ঘটনায় ছয়জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ষষ্ঠ ব্যক্তি সন্দেহভাজন বন্দুকধারী। এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু, তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ফ্লোরিডায় এ নিয়ে ছয়টি বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটল।
বন্দুকধারীর ব্যাপারে প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশ। লিওন কাউন্টির শেরিফ ওয়াল্টার ম্যাকনিল জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম ফিনিক্স ইকনার। তাঁর বয়স ২০ বছর। পুলিশ কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ইকনার লিওন কাউন্টির শেরিফের একজন ডেপুটি অফিসারের ছেলে, যিনি স্থানীয় একটি স্কুলের রিসোর্স অফিসার হিসেবে কর্মরত। ট্রামবোয়ার বলেন, তিনি সম্ভবত এফএসইউর বর্তমান ছাত্র।
ধারণা করা হচ্ছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাঁর মায়ের (যিনি শেরিফের অফিসে কাজ করতেন) অস্ত্র নিয়েই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। টালাহাসি পুলিশ-প্রধান রেভেল জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের সময় সন্দেহভাজনের কাছে যে হ্যান্ডগানটি পাওয়া গেছে, সেটি তাঁর মায়ের পুরোনো সার্ভিস ওয়েপন (সরকারি অস্ত্র)। একজন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, ছাত্রের ক্লাবে একটি শটগান এবং সন্দেহভাজনের গাড়িতে আরেকটি বন্দুক পাওয়া গেছে।
রেভেল বলেছেন, পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর সন্দেহভাজন কথা না বলার অধিকার প্রয়োগ করেছে। এ ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু অস্ত্র আইন নিয়ে রিপাবলিকানদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বন্দুক গুলি করে না, মানুষ করে!’