বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আমেরিকা ও চীনের মধ্যে যে পালটাপালটি শুল্ক বৃদ্ধি চলছিল, তার হয়তো অবসান হতে পারে। এই শুল্ক বৃদ্ধি বিশ্ববাজারকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি এ-ও বুঝিয়েছেন যে, জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকের ভাগ্য নিয়ে একটি চুক্তির জন্য হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে পালটাপালটি শুল্ক বৃদ্ধির লড়াইয়ের অবসানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি হয়তো চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক কমাতেও পারেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, টিকটক নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চাই না এগুলো (শুল্ক) আর বাড়ুক। কারণ একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে গেলে মানুষ আর কিনবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং, আমি হয়তো আরও বাড়াতে চাই না, এমনকি ওই স্তর পর্যন্তও যেতে চাই না। আমি হয়তো কমাতে চাইতে পারি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কারণ আপনারা জানেন, আপনারা চান মানুষ (পণ্য) কিনুক। আর একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে গেলে মানুষ কিনবে না।’ গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প শুল্ক আরোপের পর বাজার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। এরপর ট্রাম্পের এই মন্তব্য ডজনখানেক দেশের ওপর ব্যাপক ও উচ্চতর শুল্ক আরোপের ব্যাপারে আগ্রহ কমে আসার ইঙ্গিত দেয়।
এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট দেশটিতে প্রবেশ করা বেশির ভাগ পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে উচ্চতর শুল্ক কার্যকর করা তিনি আলোচনা সাপেক্ষে মুলতবি রেখেছিলেন। বেইজিং পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার পর তিনি চীনা আমদানির ওপর শুল্কহার বাড়িয়েছিলেন। এটি এখন বেড়ে ১৪৫ শতাংশ হয়েছে।
গত সপ্তাহে চীন বলেছিল, তারা ‘শুল্কের সংখ্যা খেলায়’ সাড়া দেবে না। এটি ছিল চীনের নিজস্ব ইঙ্গিত যে, সামগ্রিক শুল্কের হার আর বাড়বে না। ট্রাম্প বলেন, শুল্ক আরোপের পর থেকে চীন যোগাযোগ রাখছে। তিনি একটি চুক্তি হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
যদিও দুই পক্ষই যোগাযোগ রাখছে, তবু রয়টার্সকে সূত্রগুলো জানিয়েছে, একটি চুক্তি হওয়ার জন্য যে উচ্চ পর্যায়ের অবাধ আলোচনা প্রয়োজন, তা অনেকটাই হয়নি বলা চলে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে আলোচনার প্রকৃতি নির্দিষ্ট করে বলতে অস্বীকার করেন। সরাসরি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং এই আলোচনায় যুক্ত ছিলেন কি না, তা-ও জানাননি ট্রাম্প।
এদিকে, শর্ট ভিডিও অ্যাপ টিকটকের মার্কিন সম্পদ বিক্রি করার জন্য চীনভিত্তিক বাইটড্যান্সকে একটি আইনি সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প সেই সময়সীমা বারবার বাড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, যতক্ষণ না বাণিজ্য ইস্যু সমাধান হয় ততক্ষণ টিকটকের চুক্তি নিয়ে অপেক্ষা করতে হতে পারে।
ট্রাম্প বলেন, ‘টিকটকের জন্য আমাদের একটি চুক্তি আছে। কিন্তু এটা চীনের ওপর নির্ভর করবে। সুতরাং, যতক্ষণ না বিষয়টি (বাণিজ্য) কোনো না কোনোভাবে মিটে যায়, আমরা চুক্তিটি শুধু বিলম্বিত করব।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা