রীতিমতো যুদ্ধ বাঁধিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাণিজ্যযুদ্ধ। নিজ দেশকে ‘অর্থনৈতিক মুক্তি’র স্বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি খুবই কঠোর বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করছেন। এরই মধ্যে কয়েক দফায় চীনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিতে বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছেন। বিবিসি জানিয়েছে, বেইজিং নতি স্বীকার না করার কারণে সর্বশেষ চীনা পণ্যে ২৪৫ শতাংশ শুল্ক চড়িয়েছেন রিপাবলিকান এই নেতা।
এদিকে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ^ব্যাপী ৩০টির মতো মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করার কথা ভাবছেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউস বলেছে, চীনের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের ওপর ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হবে। তারা এই পদক্ষেপকে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট ট্রেড পলিসির’ অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ করেছে, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে সামরিক, মহাকাশ ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উচ্চ প্রযুক্তি উপকরণ যেমনÑ গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম এবং অ্যান্টিমনি সরবরাহ সীমিত করছে।
সম্প্রতি চীন ছয়টি ভারী বিরল মৃত্তিকা ধাতু ও বিরল মৃত্তিকা চুম্বকের রপ্তানি স্থগিত করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করেছে।
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর সর্বশেষ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়িয়েছে। এর আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছিলেন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছিলেন।
এদিকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস। মালি, লেবানন ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে মিশন ব্যর্থ হয়েছেÑ এমন অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বন্ধের এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা নথির বরাত দিয়ে রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করছে।
জাতিসংঘে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয় ওয়াশিংটন, তারপরই আছে চীন। জাতিসংঘের নিয়মিত মূল বাজেট ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার। এ অর্থের ২২ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আর শান্তিরক্ষায় ৫৬০ কোটি ডলারের বাজেটের ২৭ শতাংশ দেয় ওয়াশিংটন। এই অর্থায়ন বাধ্যতামূলক।
আসন্ন অর্থবছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য যে তহবিল বরাদ্দ বিবেচনা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য অর্থায়ন বাতিল করার প্রস্তাব করেছে অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি)। ১ অক্টোবর থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
এদিকে বৈদেশিক কূটনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। বিভিন্ন দেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০ দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। স্টেট ডিপার্টমেন্টের অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন। এ সংক্রান্ত নথিগুলো মার্কিন গণমাধ্যমটির কাছে রয়েছে।
ওই নথিতে সোমালিয়া ও ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনগুলোর কার্যক্রম কমানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনগুলোর আকার পরিবর্তন করার সুপারিশ করা হয়েছে।