শিরোনাম
◈ আলোচিত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়াই এখন অগ্রাধিকার: চীনের রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন সতর্কতা নিয়ে ‘ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর' ◈ স্ক্যানিং ছাড়াই চলছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য প্রবেশ, ঝুঁকিতে নিরাপদ বাণিজ্য! ◈ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র খুন: প্রেমিকাকেও দেখা গেল সিসিটিভিতে, মামলায় নেই তার অস্তিত্ব ◈ দেশি-বিদেশি মাস্টারপ্ল্যান আওয়ামী লীগকে মাঠে নামানোর পেছনে ◈ পারভেজ হত্যাকাণ্ড: ছাত্রদল বিভ্রান্তিকর প্রচারণা শুরু করেছে: উমামা ফাতেমা (ভিডিও) ◈ নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীকে রিকশায় পিঠে পা চেপে ঘোরানো, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় তোলপাড় ◈ ‘আমরা একটি কঠিন কিন্তু অপরিহার্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি’  ◈ বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সময় জীবননাশের শঙ্কায় ছিলাম: দাবি হাথুরুসিংহের ◈ জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসেই বদলাবেন যেভাবে

প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৩:২৯ রাত
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্রিটিশ রানির ইসরায়েলিদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য প্রকাশ্যে

প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ও সম্মানিত রাষ্ট্রনায়কদের একজন। ৭০ বছরের শাসনকালে তিনি ১২০টিরও বেশি দেশ সফর করেছেন।

তবে এই দীর্ঘ রাজত্বেও তিনি কখনো পা রাখেননি ইসরায়েলে। শুধু তাই নয়, রানির শাসনকালে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ—বাকিংহাম প্যালেসে প্রবেশের সুযোগও পাননি।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমি লন্ডনে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সারের সঙ্গে এক গোপন বৈঠক করেছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠক নিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

ব্রিটিশ রাজনীতিকদের একটি বড় অংশ বৈঠকটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে এই বিরোধিতার শিকড় কিন্তু অনেক পুরোনো—যার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সময়েও।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন একবার প্রকাশ্যে স্বীকার করেন, রানি এলিজাবেথ কখনোই ইসরায়েলকে ভালো চোখে দেখতেন না। হাইফা টেকনিয়ন ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘রানি মনে করতেন প্রত্যেক ইসরায়েলি হয় একজন সন্ত্রাসী, নয়তো সন্ত্রাসীর সন্তান।’

তিনি আরও বলেন, রানির শাসনামলে আন্তর্জাতিক কোনো রাষ্ট্রীয় আয়োজনে ছাড়া বাকিংহাম প্যালেসে কোনো ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে ঢুকতে দেওয়া হতো না।

রানির এমন অবস্থানের পেছনে ঐতিহাসিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। ধারণা করা হয়, ১৯৪০-এর দশকে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের সময় ইহুদিবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংস বিদ্রোহ এবং ব্রিটিশ সেনাদের ওপর হামলার কারণে ইসরায়েলের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে ব্রিটিশ রাজপরিবারে। এই মনোভাবের ধারক ছিলেন রানি এলিজাবেথ নিজেও।

রিভলিন বলেন, রানি এলিজাবেথ ও আমাদের (ইসরায়েল) মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা জটিল ছিল। ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রিভলিন বলেন, তিনি (রানি) আন্তর্জাতিক কোনো রাষ্ট্রীয় আয়োজন ছাড়া প্যালেসের ভেতরে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের ঢুকতে দিতেন না।

২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন রানি এলিজাবেথ। তার মৃত্যুর পর কনজারভেটিব ফ্রেন্ডস অব ইসরায়েল গ্রুপের অনারারি প্রেসিডেন্ট স্টুয়ার্ট পলক দাবি করেন, ইসরায়েল সফর করতে রাজপরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এমনকি ২০১২ সালে ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ-এর সাবেক প্রধান সম্পাদক ডেভিড লানডাও লিখেছিলেন, যদি রানি ইসরায়েল সফরে যেতে চাইতেন, অথবা রাজপরিবারের কেউ যেতে চাইতেন, তাহলে কেউ তাদের ঠেকাতে পারত না। কিন্তু তারা নিজ থেকেই ইচ্ছা প্রকাশ করেননি।

রানির ইসরায়েলবিরোধী মনোভাবের আরেকটি উদাহরণ ১৯৮৪ সালের জর্ডান সফর। সেখানে অবস্থানকালে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দখলকৃত পশ্চিম তীরের আকাশসীমায় উড়তে দেখে রানি নাকি বলেছিলেন, তা ছিল এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা।

এত কিছু সত্ত্বেও রানির জনপরিসরে ইসরায়েল বিষয়ে কোনো সরাসরি মন্তব্য খুব বেশি পাওয়া যায় না। তবে পর্দার আড়ালে তার এই কঠোর অবস্থান আজও আলোচনায় উঠে আসে, বিশেষ করে যখন কোনো ব্রিটিশ রাজনৈতিক ব্যক্তি ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বা কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পদক্ষেপ নেন।

বাকিংহাম প্যালেস সবসময়ই ব্রিটিশ রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রানির সময় যে কূটনৈতিক বার্তা দিত, সেটি হয়তো অনেকেই সরাসরি বলতেন না, কিন্তু বাস্তবতা হিসেবে স্বীকার করতেন—যেমনটি স্বীকার করেছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিভলিন। অনুবাদ: কালবেলা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়