চীনা পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক বৃদ্ধি করে ১২৫ শতাংশ করেছে বেইজিং। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান এ বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে কথা বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। তিনি জানিয়েছেন, তার দেশ ‘ভয় পায় না। খবর সিএনএনের।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভিতে সি জিনপিং বলেন, ‘৭০ বছরের বেশি সময় ধরে চীনের উন্নয়ন আত্মনির্ভরতা এবং কঠোর পরিশ্রমের ফল। অন্যদের অনুদানে এই উন্নয়ন হয়নি। চীন কোনো অন্যায্য দমন-পীড়নকে ভয় পায় না।’
পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের এই খেলা কয়েকদিন ধরে চললেও পর্যন্ত চুপ ছিলেন তিনি। কিন্তু এ বিষয়ে প্রথম বক্তব্যে কঠোর বার্তা দিয়েছেন তিনি। চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাহ্যিক পরিবেশ যতই পরিবর্তিত হোক না কেন, চীন আত্মবিশ্বাসী থাকবে, মনোযোগী থাকবে এবং নিজস্ব বিষয়গুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার দিকে মনোনিবেশ করবে।’
এর আগে শুক্রবার বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ বিজয়ী হয় না। আর বিশ্বের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা কেবল ঠেলে দেবে আত্মবিচ্ছিন্নতার দিকে।’
আগামীকাল শনিবার থেকে চীনের ঘোষিত নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্প্রতি পাল্টাপাল্টি শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে তীব্র বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তবে চীন ইঙ্গিত দিয়েছে, ১২৫ শতাংশের বেশি শুল্ক বাড়ানোর ইচ্ছা নেই তাদের।
চলতি বছর মার্চে প্রথমবার চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ২ এপ্রিল এটিকে বাড়িয়ে ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিং।
চীনের এমন পদক্ষেপে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং তিনি বলেন, ৮ এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করলে চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হবে।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে চীন। বেইজিংয়ের এ পদক্ষেপের পর বুধ ও বৃহস্পতি দুই দফায় চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক বৃদ্ধি করে ১৪৫ শতাংশ করেন ট্রাম্প। এরপরই মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক বাড়ানো পদক্ষেপ নিল বেইজিং।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বলেছেন, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ একটি সংখ্যার খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়, যার কোনো বাস্তব অর্থনৈতিক তাৎপর্য নেই।
তিনি আরও আরও বলেন, ‘এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ককে হুমকি ও বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার অনুশীলনকে আরও প্রকাশ্যে এনেছে, যা কৌতুকে পরিণত হয়েছে।’