মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার ঘোষণা দেয়ার দুইদিন পরই তেহরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি দপ্তর। খবর রয়টার্স
এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি দপ্তর জানিয়েছে, পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন দেয়ায় ইরানের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান এবং এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তেহরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে দূরে রাখতেই এই নিষেধাজ্ঞা।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের মন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ওই বিবৃতিতে বলেন, ইরানের শাসকদের বেপরোয়া পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান যাতে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিতে না পারে এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কাছে থাকা যাবতীয় ক্ষমতা আমরা প্রয়োগ করে যাব।’
তবে এ বিষয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরান মিশন তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এমন এক সময় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার হঠাৎ করে তেহেরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি আলোচনার করার কথা জানান। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওমানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা হবে পরোক্ষভাবে, সরাসরি নয়।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছেন, ওই আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে ইরানকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠান ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- ইরানের অটোমিক এনার্জি প্রতিষ্ঠান (এইওআই) এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইরান সেন্ট্রিফিউগ টেকনোলজি কোম্পানি (টিইএসএ)।
মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট মঙ্গলবার বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরান চুক্তি না করলে দেশটির বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
২০১৫ সালে ইরান সহ ছয় দেশের মধ্যে- (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন, ব্রিটেন ও জার্মানি) পারমাণবিক চুক্তি সই হয়। কিন্তু ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৭ সালে এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার বিষয়টি মূলত অচল হয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার ইরানের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় সতর্ক রয়েছে তেহেরান। কারণ আলোচনায় অগ্রগতির বিষয়ে তাদের খুব একটা আস্থা নেই এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নিয়েও তাদের সন্দেহ রয়েছে।