ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল নিয়ে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে মুসলমানদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। ধর্মীয় সম্পত্তির ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে হাজার হাজার মুসলিম প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন। তারা কুশপুত্তলিকা দাহ করে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে এবং ওয়াক্ফ বিলের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদ জানাতে এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার, ভারতের প্রখ্যাত সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-এ অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সাগরিকা ঘোষ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে এক বিস্তৃত সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন যে, বিজেপি তাদের রাজনৈতিক লাভের জন্য মুসলমানদের লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদী ভোটব্যাংককে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বিজেপি এমন একটি দল, যারা মুসলমানদের কল্যাণে কাজ করার দাবি করলেও তাদের কার্যকলাপ বিতর্কিত এবং রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়। সাগরিকা ঘোষ আরও বলেন, বিজেপি যদি মুসলমানদের জন্য কাজ করত, তাহলে তাদের দলেই একজনও মুসলমান সংসদ সদস্য থাকার কথা ছিল। তবে ভারতীয় পার্লামেন্টে বিজেপির কোনো মুসলমান সংসদ সদস্য নেই এবং গত দুই দশক ধরে মোদির গুজরাটে বিজেপি কোনো মুসলিম নেতা নির্বাচনের জন্য মনোনীত করেনি।
তিনি বলেন, ওয়াক্ফ সংশোধনী বিলটি মূলত হিন্দুত্ববাদী ভোটব্যাংককে শক্তিশালী করার একটি কৌশল এবং সরকারের এই পদক্ষেপ মুসলিমদের উপর একধরনের আক্রমণ। ওয়াক্ফ বিলের মাধ্যমে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা। প্রধানমন্ত্রী মোদি সরকারের কর্মকাণ্ড থেকে স্পষ্ট যে, তারা নাগরিকদের সার্বভৌমত্ব এবং সংবিধানের অধিকারকে অগ্রাহ্য করছে।
ওয়াক্ফ বিলের পাস হওয়ার পর, সরকারের পক্ষ থেকে এটি মুসলমানদের কল্যাণের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে প্রচারিত হলেও, বিরোধী দলগুলো এবং মুসলিম নেতারা এর সমালোচনা করছেন এবং এটি হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর ভোটব্যাংক কৌশল হিসেবে দেখছেন। এই পরিস্থিতিতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সামাজিক উত্তেজনা এবং ধর্মীয় বিভেদ আরও গভীর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনুবাদ: নিউজ২৪