ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে সম্প্রতি প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে হত্যার দুটি ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে পুরো রাজ্যেই আলোড়ন তৈরি হয়েছে। এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে এক যুবক তাঁর স্ত্রীকে নিজেই প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্ত্রীকে প্রেমিকের হাতে তুলে দেন বাবলু নামের এক যুবক। খুন হওয়ার ঝুঁকি এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, বাবলু পেশায় শ্রমিক। উত্তর প্রদেশের শান্ত কবিরনগরের কাটার জোট গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ২০১৭ সালে রাধিকা নামে এক তরুণীকে বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তানও রয়েছে। কাজের সুবাদে অন্য একটি রাজ্যে থাকতে হয় তাঁকে, স্ত্রী কাটার জোট গ্রামেই থাকেন। সম্প্রতি বাবলু জানতে পারেন, ওই গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে স্ত্রীর প্রেম চলছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ছুটি নিয়ে স্ত্রীকে না জানিয়ে গ্রামে আসেন বাবলু।
বিকাশ নামে এক যুবকের সঙ্গে সত্যিই স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক আছে এটা নিশ্চিত হয়ে তিনি গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের ব্যাপারটি জানান। এরপর নিজেই স্ত্রীকে বিকাশের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কোনো বাগ্বিতণ্ডায়ও জড়াননি তিনি।
পরে হিন্দু রীতি মোতাবেক বিকাশ ও রাধিকার বিয়ে দেন বাবলু। এমনকি, আদালতে এ বিয়ের সাক্ষীও ছিলেন তিনি। বিয়ের পর রাধিকা আর বিকাশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেছেন।
দুই সন্তানকে একাই লালন–পালন করবেন বলে জানিয়েছেন বাবলু।
কেন এমন উদারতা দেখালেন তা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘নিজের ক্ষতি এড়াতে আমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চারপাশে যেসব খবর শুনছি, তা খুবই ভয়ংকর! উত্তর প্রদেশেই প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে হত্যার দুটি ঘটনা ঘটেছে। আমি এমন কিছু চাই না। বরং আমরা দুজনই যাতে ভালো থাকতে পারি, সেটি নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত।
এর আগে গত ৩ মার্চ এমন একটি হত্যাকাণ্ড বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। সৌরভ নামের এক সাবেক নৌবাহিনী কর্মকর্তা ছয় বছর বয়সী মেয়ের জন্মদিন উদ্যাপন করতে উত্তর প্রদেশের মিরাটে নিজ বাড়িতে যান। আর সেদিনই তাঁর স্ত্রী মুসকান ও তাঁর প্রেমিক সাহিল তাঁকে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে একটি সিমেন্টের ড্রামে লুকিয়ে রাখেন। সৌরভকে হত্যার পর মুসকান ও সাহিল শিমলা ও মানালি ভ্রমণে যান এবং সেখানে হোলি উৎসবও উদ্যাপন করেন। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সামনে আসার পর পুরো ভারতেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার মাত্র দুই সপ্তাহ পর রাজ্যে একই ধরনের আরও একটি ঘটনা ঘটে। বিয়ের ১৪ দিনের মাথায় প্রেমিক অনুরাগ যাদবের সঙ্গে মিলে পরিকল্পনা করে ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামী দিলীপকে হত্যা করেন প্রগতি যাদব নামের এক তরুণী। অনুরাগের সঙ্গে যাদবের চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরিবার তাঁকে জোর করে দিলীপের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিল।