শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৫, ১২:৪৫ রাত
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতে ট্রাম্পের ধাঁচে ‘অভিবাসী বিল’ পাস, বাংলাদেশের সীমান্ত নিয়ে অমিত শাহর সতর্কতা

অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধাঁচে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স বিল, ২০২৫’ এনেছে ভারতের মোদি সরকার। আজ বৃহস্পতিবার লোকসভায় এই বিলটি পাস হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে এনডিটিভিসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম।

লোকসভায় এই বিলের ওপর আলোচনার সময় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, যে ব্যক্তিদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করা হবে, তাদের কোনোভাবেই দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিলটির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশটা কোনো ধর্মশালা নয়।’

সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি কেউ দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে ভারতে আসেন, তবে তাঁকে সব সময় স্বাগত জানানো হবে। যারা পর্যটক হিসেবে, শিক্ষার জন্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা দানের জন্য, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য, ব্যবসার জন্য ভারতে আসতে চান, আমি তাঁদের সকলকে স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা দেশের জন্য হুমকি বয়ে নিয়ে আসে, আমরা তাদের ওপর কড়া নজর রাখব এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

এই বিলের ওপরে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিতর্ক চলে লোকসভায়। বিলটির বিষয়ে শাহ আরও জানান, প্রস্তাবিত আইনটি দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে। অর্থনীতি ও ব্যবসা চাঙা হবে এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত উৎসাহ পাবে। তিনি বলেন, ‘অভিবাসন কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এটি বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে জড়িত। ভারতে ভ্রমণকারী প্রত্যেকের ওপর নিবিড় নজরদারি নিশ্চিত করবে এই বিল। তারা কেন ভারতে আসছে এবং কত দিন তারা ভারতে থাকতে চায়, সব জানা যাবে। ভারতে ভ্রমণকারী প্রতিটি বিদেশির সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত জরুরি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-নাইন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকেই নতুন করে বেড়েছে অনুপ্রবেশের ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গকে ট্রানজিট রুট বিবেচনা করে বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভারতে ঢুকে পড়ছে। তবে সেই অবৈধ প্রবেশ রুখতে ইতিমধ্যেই দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টনক নড়েছে।

সংসদে দাঁড়িয়েই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মাঝে মধ্যেই দেখি প্রশ্ন তোলা হয় সেনা ও বিএসএফ-এর দিকে। কিন্তু আজ দেশবাসীকে আমি সত্যিটা জানাব। ২ হাজার ২১৬ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমানা। তার মধ্যে ১ হাজার ৬৫৩ কিলোমিটার কাঁটাতার বসানো হয়ে গেছে। বাকি রয়েছে ৫৬৩ কিলোমিটার অঞ্চল। এর মধ্যে আবার ১১২ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে নদী-নালা বয়ে চলেছে। যেখানে কাঁটাতার বসানো অসম্ভব। বাকি ৪০০ কিলোমিটার ফেন্সিং সম্ভব।’

এরপরই পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে আক্রমণ করে অমিত শাহ বলেন, ‘আমি বাংলার সরকারকে এই ৪০০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার বসানোর জন্য দশবার রিমাইন্ডার দিয়েছি। রাজ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং মুখ্য সচিবের সঙ্গে ৭ বার বৈঠক করেছি। কিন্তু তারপরেও তারা এখনো জমি দেয়নি। যেখানেই কাঁটাতার বসানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেখানেই বাংলার শাসকগোষ্ঠীর লোকেরা গন্ডগোল পাকায়। স্লোগান দেয়।’

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে লক্ষ্যবস্তু করে শাহ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি ওদের সরকারের অনেক দরদ। তাই এই বাকি পড়ে থাকা সীমানা এলাকায় কাঁটাতার বসাতে দিচ্ছে না। ২০২৬ সালে বিজেপি সেই রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এই বকেয়া কাজ শেষ করবে। অবশ্য তার আগেই এই ভাষণ শুনে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জায়গা ছেড়েও দেয়, তাও ১১২ কিলোমিটার এলাকা ফাঁকা থাকছে। একটা অনুপ্রবেশকারীর সীমানা পার করতে কতই বা জায়গা লাগে? অসমে যখন কংগ্রেস সরকার ছিল, তখন ওই এলাকা থেকে রোহিঙ্গা ঢুকত, এখন বাংলা হয়ে ঢুকছে।’ উৎস: আজকের পত্রিকা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়