পবিত্র রমজান মাসেও গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা থামেনি। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে অবরুদ্ধ গাজায় একের পর এক নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি গাজার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতাল বিমান হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। তুরস্কের সহায়তায় নির্মিত এই হাসপাতালটি গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। খবর আনাদোলু ও আল-জাজিরার।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতালটি ধ্বংস করায় ইসরায়েলের নিন্দা জানাচ্ছে আঙ্কারা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজায় হাসপাতালে হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলের হিংস্রতা ও নিষ্ঠুরতা প্রকাশ পেয়েছে। গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করাই ইসরায়েলের লক্ষ্য।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরায়েলের অবৈধ হামলা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দৃঢ় ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার মেডিকেল বিভাগও ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০৬ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত ২০০ শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৯০৯ জন।
যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় গাজার বাসিন্দারা আবারও প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছাড়ছেন। ইসরায়েল নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। ইসরায়েলি বিমান থেকে আবাসিক এলাকাগুলোতে লিফলেট ফেলা হয়েছে, যাতে উত্তরের বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুন শহর, গাজা সিটির শিজাইয়া জেলা এবং দক্ষিণে খান ইউনিসের পূর্ব প্রান্তের বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাজায় চলমান এই সংকটে মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে গাজার বাসিন্দারা। ইসরায়েলের বাধার কারণে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় দিনের পর দিন অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। প্রায় দুই দশক ধরে অবরুদ্ধ গাজাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে ইসরায়েল।
এই সংকটের মধ্যেই আবারও ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার হয়েছে গাজা। মাত্র ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের এই ছোট ভূখণ্ডে ইসরায়েল পরিকল্পিত গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।