পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে সমঝোতায় আসার জন্য ইরানকে ২ মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
এক প্রতিবেদেনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে আমিরাতের একজন কূটনীতিক বুধবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগশিকে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের সূত্রের বরাত দিয়ে এক্সিওস জানিয়েছে, বেশ কড়া ভাষায় চিঠিটি লিখেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরান যদি সমঝোতায় আসতে রাজি না হয়— সেক্ষেত্রে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে দেশটিকে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চিঠিটি পাঠানোর আগে ইসরায়েল, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কিছু মিত্র দেশের কূটনীতিককে তা দেখিয়েছেন ট্রাম্প, চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাও করেছেন।
চিঠিটি ট্রাম্প লিখেছিলেন চলতি মার্চ মাসের শুরুর দিকেই। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স বিজনেস নিউজকে সে সময় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিতও করেছিলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি তেহরানের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছি। সেখানে আমি বলেছি যে আমি আশা করি আপনারা (তেহরান) সমঝোতায় আসবেন। কারণ যদি আপনারা না আসেন, সেক্ষেত্রে আমাদের সামরিক পন্থায়ে এগোতে হবে এবং তা হবে ভয়ঙ্কর একটি ব্যাপার।”
“অর্থাৎ তাদের সমানে দু’টি বিকল্প রয়েছে— হয় সমঝোতায় আসতে হবে, নয়তো সামরিক অভিযানের মুখে পড়তে হবে…আমি সমঝোতায়ে যেতে আগ্রহী, কারণ আমি ইরানকে আঘাত করতে চাই না। ইরানিরা চমৎকার মানুষ।”
এই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর এক বার্তায় খামেনি কৌশলে ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাব আসলে একপ্রকার ভাঁওতাবাজি এবং ইরানের ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা জারির জন্যই এই ভাঁওতা দিচ্ছেন তিনি।
তবে বুধবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিটি গ্রহণের পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এক্সিওসকে জানিয়েছেন, চিঠিটির অনুপুঙ্খ যাচাই শেষে এ ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাবে তেহরান।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।
ইরান অবশ্য বলেছে যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনা দেশটির নেই। সূত্র : এক্সিওস