শিরোনাম
◈ বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত ◈ বাঁচানো গেলো না মাগুরার সেই শিশুটিকে ◈ বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সমস্যা নিয়ে মহাসড়কে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না: আইজিপি ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সরালেই কী পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে, কী বলছেন রাজনীতিবিদরা ◈ সচিবালয় ও শাহবাগসহ আশপাশে মিছিল-গণজমায়েত নিষিদ্ধ ◈ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও ৬০ দিন বাড়ল ◈ আপিল বিভাগের রায়: ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা ◈ শেখ হাসিনার অপরাধের তদন্ত শেষ পর্যায়ে, এপ্রিল মাসে শুরু হচ্ছে বিচার ◈ ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশ নারী দল ঘোষণা ◈ বিএসএফের হাতে ১ বছরে ২৬০১ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৯ দুপুর
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : আর রিয়াজ

যেভাবে ৫০ দিনে বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিলেন ট্রাম্প

নিউইয়র্ক টাইমস: চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার মসনদে বসেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ১১ মার্চ ছিল তার ক্ষমতা গ্রহণের ৫০ দিন। এই সময়ের মধ্যে এমন অনেক কাজ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আর কোনও প্রেসিডেন্ট করেননি। ক্ষমতা গ্রহণের পরই নির্বাহী আদেশের ঝড় তোলেন ট্রাম্প। একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে তোলেন তিনি। তার এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভিত্তি আমূল পরিবর্তন করেছে। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের পর খুব কষ্টে ওয়াশিংটনই এসব ভিত্তি তৈরি করেছিল।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থানে ছিল, ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বা বিকল্প কৌশলগত রূপরেখা ঘোষণা না করেই কিয়েভকে ছুড়ে ফেলছেন। রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানিয়ে সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়াকে আগ্রাসনকারী দেশ উল্লেখ করে একটি প্রস্তাব এনেছিল ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোটদানের নির্দেশ দিতে দ্বিধা করেননি ট্রাম্প।

শুধু তা–ই নয়, একই দিন সাধারণ পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে একটি বিকল্প প্রস্তাব এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানানো হয়নি। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে।

ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই পানামা খাল, গ্রিনল্যান্ড, গাজা এমনকি কানাডাকে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার এসব বক্তব্য লুণ্ঠনকারীর হুমকির মতো মনে হয়েছে। মঙ্গলবার কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তকে ‘কৃত্রিম বিভাজক রেখা’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

ওয়াশিংটনে ওভাল অফিসে ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর ইউক্রেনে অস্ত্র ও মার্কিন বাণিজ্যিক উপগ্রহ চিত্র তথা গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ আংশিক বন্ধ করেছিলেন ট্রাম্প। তবে রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর কিয়েভের ওপর থেকে এই দুই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মিত্রদের যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির রক্তচোষা তকমা দিয়ে তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ন্যাটো মিত্রদের আস্থায় ফাটল ধরিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভরসা করতে না পেরে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। পোল্যান্ড পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর চিন্তাভাবনা করছে। দেশ দুটি নিজেদের রক্ষার ক্ষেত্রে শেষ আশ্রয় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আর ভরসা রাখতে পারছে না।

বিদ্যমান বিশ্বব্যবস্থাকে বদলে দিতে ট্রাম্প কতটা সফল হবেন, তা কেউ জানেন না। ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে এই ব্যবস্থার ভিত্তি রচনা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান (১৯৪৫-৫৩)। এরপর থেকে পরবর্তী সব প্রেসিডেন্ট এই ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে অবদান রেখেছেন। নতুন বিশ্বব্যবস্থার যে ভিত্তি ট্রুম্যান গড়েছিলেন, সেটার মর্মকথা তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডিন অ্যাকেস নিজের স্মৃতিকথা ‘প্রেজেন্ট অ্যাট দ্য ক্রিয়েশন’ নামের বইয়ে তুলে ধরেছেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন যা শুরু করেছে, তাতে আজকাল ওয়াশিংটনে থাকাটা অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে।

সফট পাওয়ারের প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জোসেফ এস নাই জুনিয়র ট্রাম্পের সম্পর্কে সম্প্রতি বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দাতব্য কর্মকাণ্ডের সমস্যা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন। কিন্তু বেলা শেষে তা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পক্ষেই যায়।

পুরেনো ব্যবস্থাকে ভেঙে দিতে চাইলেও নিজে কী গড়তে চাইছেন, তা নিয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না। তবে তার কাজ দেখে মনে হচ্ছে, ঊনবিংশ শতাব্দীর বৃহৎ শক্তির রাজনীতির জগৎই তার পছন্দ। তাই তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে নানা বিষয়ে দর-কষাকষি করছেন। অন্যদিকে ছোট শক্তিগুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন। তথ্যসূত্র: বিডিপ্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়