শিরোনাম
◈ আপিল বিভাগের রায়: ২য় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা ◈ শেখ হাসিনার অপরাধের তদন্ত শেষ পর্যায়ে, এপ্রিল মাসে শুরু হচ্ছে বিচার ◈ ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশ নারী দল ঘোষণা ◈ বিএসএফের হাতে ১ বছরে ২৬০১ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার ◈ তিনদিন ধরে খোঁজ নেই এডিসি রাশেদুলের ◈ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল ◈ আইসিসি যেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড: অ্যান্ডি রবার্টস ◈ ট্রাম্পের বলদর্পিতা কীভাবে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ শক্তিশালী করবে? ◈ আইসিইউতে আছে পাকিস্তানের ক্রিকেট: শহিদ আফ্রিদি ◈ তাসকিন ও মুস্তাফিজ আইপিএল খেলবেন, অথচ বিসিবির কাছে এখনো এনওসি চাননি

প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০২৫, ০৩:১০ রাত
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উদ্বিগ্ন আমেরিকায় বসবাসরত ভারতীয়রা

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক আলোড়ন তোলা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক, বাণিজ্য, অবৈধ অভিবাসন, নিজ দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী ছাঁটাই কী নেই ট্রাম্পের তালিকায়! শত্রু-মিত্র সব দেশের সঙ্গে একই আচরণ করছেন তিনি। কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের মতো ভারতের ওপরও আরোপ করা হয়েছে শুল্ক। এছাড়া ভারতের অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠিয়েছেন নিজ দেশে। আর এ সবকিছু মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ঠিক কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকায় বসবাসরত ভারতীয়রা। ২০২৪ সালের অক্টোবরে কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস এবং ইউগভ নামে দুটি সংস্থা পরিচালিত এক জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

জরিপে বলা হয়, এতদিন দেশ দুটিতে সম্পর্কের পারদ উন্নতির দিকেই ছিল। তবে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকার ফেডারেল অভিযোগ এবং আমেরিকার মাটিতে দিল্লি-সমর্থিত হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগের কারণে দেশ দুটির সম্পর্কে কিছুটা টানাপড়েন সৃষ্টি হয়।

আমেরিকায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাসিন্দার সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। যার মধ্যে ছিল বাইডেনের শাসনামলে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক কেমন ছিল, ট্রাম্পকে আরো ভালো বিকল্প হিসেবে দেখছেন কি না এবং ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের পর ভারতের গতিপথ নিয়ে তাদের মূল্যায়ন।

এসব প্রশ্নের জবাবে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন ভিন্ন মত। ১২০৬ জন ভারতীয়-আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক বাসিন্দার ওপর অনলাইনে করা জরিপে দেখা গেছে ভারত-আমেরিকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের তুলনায় বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা অনেক বেশি সুবিধাজনক ছিল। এমনকি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালো মনে করেছেন তারা। তবে ৬৬ শতাংশ ভারতীয়-আমেরিকান রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প দুদেশের সম্পর্কের জন্য ভালো ছিলেন। যেখানে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। অন্যদিকে, ১৫ শতাংশ রিপাবলিকানের তুলনায় অর্ধেক ভারতীয়-আমেরিকান ডেমোক্র্যাট বাইডেনের পক্ষে। যেহেতু বেশিরভাগই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক, তাই এ ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে আছেন বাইডেন।

এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে সময় উভয় নেতা একে অপরের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প নিজ দেশের পণ্যের ওপর ভারতের উচ্চমূল্যের শুল্কারোপের কড়া সমালোচনা করেছিলেন।

ভাড়াটে খুনের বিতর্ক নিয়েও দুদেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়। গত অক্টোবরে স্বাধীন শিখ রাষ্ট্র খালিস্তানের পক্ষে আমেরিকাভিত্তিক সমর্থককে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয় একজন সাবেক ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনাটি বৃহৎ পরিসরে নথিভুক্ত হয়নি। আর এ বিষয়টি উত্তরদাতাদের অর্ধেকই জানতেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করতে ভারত সরকার গঠিত একটি প্যানেল সাবেক গোয়েন্দা এজেন্ট বলে মনে করা একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল। বাইডেন প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে সঠিক নয় বলে উত্তর দিয়েছিলেন জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ।

ভারতীয় আমেরিকান যারা ডেমোক্র্যাট, তারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আর রিপাবলিকানরা ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ১০ উত্তরদাতার মধ্যে চারজন বলেছেন, চলমান সংঘাতে বাইডেন ইসরাইলের পক্ষে ছিলেন।

এদিকে ৪৭ শতাংশ ভারতীয় আমেরিকান বিশ্বাস করেন, ভারত সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে, যা চার বছর আগের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। একই অংশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির কর্মক্ষমতাকেও সমর্থন করে। ১০ জনের মধ্যে চারজন বলেছেন, সর্বশেষ নির্বাচনে মোদির দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে দেশকে আরো গণতান্ত্রিক করে তুলেছে। জরিপে দেখা গেছে, অনেক ভারতীয় আমেরিকান মোদিকে সমর্থন এবং বিশ্বাস করেন ভারত সঠিক পথেই আছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা ট্রাম্পের বিষয়ে বেশ সতর্ক। এর কারণ হিসেবে মোদির জাতীয়তাবাদী নীতি দায়ী, না কি অন্য কিছু। এ গবেষণার সহযোগী মিলান বৈষ্ণব বলেছেন, বর্তমানে ভারতীয় আমেরিকানরা ট্রাম্পকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য হুমকি মনে করছেন। আর এর পেছনে অন্যতম কারণ দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের নীতি পরিবর্তন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়