যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে হওয়া বাক বিতণ্ডার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে পথে এগোতে চাচ্ছে, সেই পথে ইউক্রেনও প্রস্তুত আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বিবিসি
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সব ধরনের সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর এই প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন জেলেনস্কি, যদিও তিনি তার পোস্টে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু উল্লেখ করেননি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি শান্তির প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা কেউই সীমাহীন যুদ্ধ চাই না। দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে আসতে প্রস্তুত ইউক্রেন। অন্যদের চেয়ে সবচেয়ে বেশি শান্তি চায় ইউক্রেন।
তিনি আরও বলেন, স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমি এবং আমার দল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বে কাজ করতে প্রস্তুত। আমরা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কাজ করতে প্রস্তুত।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য প্রথম ধাপ নিয়েও মন্তব্য করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে বন্দিদের মুক্তি, আকাশে মিসাইল ও ড্রোন উড্ডয়ন বন্ধ করা যেতে পারে। এছাড়া জ্বালানি ও অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করতে হবে। রাশিয়া যদি রাজি হয়, তাহলে সমুদ্রেও যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
তিনি আরও যোগ করেন, প্রথম ধাপের পর আমরা দ্রুত পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে চাই এবং একটি শক্তিশালী চূড়ান্ত চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। বিশেষ করে, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে, আমরা সেটিকে সত্যিই মূল্যবান বলে মনে করি। আমাদের মনে আছে সেই মুহূর্ত, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনকে জ্যাভলিন মিসাইল দিয়েছিলেন, যা পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিল। আমরা এর জন্য কৃতজ্ঞ।
ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাকবিতণ্ডার বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজে আমাদের বৈঠকটি যেভাবে হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি। এটি দুঃখজনক যে, বিষয়টি এমনভাবে ঘটেছে। এখন সময় এসেছে বিষয়গুলো ঠিক করার। আমরা চাই, ভবিষ্যতে সহযোগিতা ও যোগাযোগ আরও গঠনমূলক হোক।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো সময় খনিজ সম্পদ বিষয়ক চুক্তি করতে ইউক্রেন প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি। তার মতে, এটি ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি আনার একটি বড় ধাপ হবে।