ফরহাদ হোসেন, ভোলা প্রতিনিধি : দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন গ্যাস সমৃদ্ধ দ্বীপ জেলা ভোলায় ক্ষুদ্রশিল্প কল কারখায়নায় গ্যাসংযোগ দেয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। শিল্প মালিকদের গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে, জ্বালানী উপদেষ্টার ফাউজুল কবির খানের এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে এখানকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি টাইপের শিল্প মালিকগণ আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিল।
গত বছরের ১লা নভেম্বর জ্বালানি উপদেষ্টা ভোলার সার্কিট হাউজে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের কাছে এমন ঘোষণা দেন। সেই আলোকে ভোলা বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত ক্ষুদ্রশিল্প মালিকগণ গ্যাসসংযোগ পাওয়ার প্রত্যাশায় পেট্রো বাংলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি বরাবর আবেদন করেন। সেই আবেদন গ্রহণ করে সর্বপ্রথম ভোলার বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত মেসার্স জে.কে ট্রেডার্সকে গ্যাস সংযোগের অনুমোদন দেন। গত বছরের ২ ডিসেম্বর উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের গ্যাস সংযোগের চিঠিটি মালিক পক্ষকে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে সরবরাহ করেন। যা এস,জিসিএল এর ১৬২তম বোর্ড সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক হয়েছে। যার স্মারক নম্বর-৪০১১/২৬/১২/২৪ইং। বিসিক নিজস্ব অর্থায়নে গ্যাস সংযোগ লাইনের কাজ সম্পন্ন করেন। রাষ্ট্রয়াত্ত্ব কোম্পানির সকল নিয়ম কানুন মেনে একশত ভাগ জামানত দিয়েই শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগের লাইনের কাজ সম্পন্ন করেন। সকল প্রক্রিয়া শেষের পর মেসার্স জে,কে ট্রেডার্স কোম্পানি যে মুহুর্তে কাজের জন্য দেড়শত শ্রমিক নিয়োগ দিলো ঠিক সে মুহুর্তে অজ্ঞাত কারনে সেখানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
ভোলার বিসিক শিল্পনগরীর জে,কে ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মো: জামালউদ্দিন খান বলেন, আমি প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় করে বহু বুকভরা আশা নিয়ে কোম্পানির কার্যক্রমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করি কিন্তু কোন অদৃশ্য কারনে আমার কারখানায় গ্যাস চালু করা হলোনা তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, আমার দেড়শত শ্রমিককে এখন বসিয়ে রেখে বেতন দিচ্ছি। ফলে হতাশ হয়ে এখন শ্রমিকদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এদিকে ওই কোম্পানির শ্রমিকরা কারখানার কাজ শুরু না হওয়ায় এখন বেকার পড়ে আছেন বলে গণমাধ্যমের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ভোলা দপ্তরের ব্যবস্থাপক মো.অলিউর রহমান বলেন, ভোলার গ্যাস তো জাতীয় গ্রীডের সাথে সংযুক্ত নয়। সেই আলোকে ভোলায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ দিতে কোনো বাধা নেই। জে,কে ট্রেডার্স কোম্পানির গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি অফিশিয়াল ভূল বুঝাবুঝি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বলেও দাবী করেন তিনি। তবে অতি দ্রুত সংযোগ দেয়া হবে।
ভোলার বিসিক শিল্পনগরীর জেলা কর্মকর্তা এসএম সোহাগ হোসেন বলেন, সরকারি অর্থায়নে আমরা গ্যাস লাইন টানার কার্যক্রম সমাপ্ত করি। কিন্তু সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি নিজেদের অফিসিয়াল সিষ্টেম লসের কারণে গ্যাস সঞ্চালন দিতে বিলম্ব করছেন।