ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘তাদের (বাংলাদেশ) স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি। আমরা এমন কোনো আচরণ দেখতে চাই না, যা ভারতের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ সংকেত দেয়। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়।’
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য উৎসবে বাংলাদেশ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন জয়শঙ্কর।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ার (ইউএনআই) প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক যেন স্বাভাবিক থাকে, ভারত সেটাই চায়। আমরা প্রতিবেশীদের সর্বদা শুভ কামনা জানাই। বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়।
বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেবল দীর্ঘ নয়, এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এক বিশেষ ইতিহাস।’
বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের নাক গলানো এবং সীমান্ত-হত্যাসহ নানা বিষয়ে দেশটিকে সতর্ক করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের দেওয়া বক্তব্যকে ‘ভারতবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, এসব বক্তব্য ‘সম্পূর্ণ হাস্যকর’।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত বছর সেখানে যা ঘটেছে, তা সবাই জানেন।’
জয়শঙ্কর বাংলাদেশের পরিস্থিতির দুটি দিককে ভারতের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘প্রথমত, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলা। আমি মনে করি, এটি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে এবং এ বিষয়ে আমাদের কথা বলা প্রয়োজন, যা আমরা এরই মধ্যে করেছি।’
‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ যদি প্রতিদিন ভারতের ওপর দোষারোপ করে এবং প্রতিবেদনগুলো দেখলে বোঝা যায়, অনেক অভিযোগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও হাস্যকর।’
‘একদিকে ভালো সম্পর্ক চাওয়ার কথা বললে, আরেক দিকে প্রতিদিন সকালে উঠে যদি সব কিছুর জন্য আমাদের দোষারোপ করা হয়, তাহলে তা মানানসই নয়। তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চাইছে,’ বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, আপনারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা চাই, পরিস্থিতি শান্ত হোক, বাণিজ্য, পারস্পরিক যোগাযোগ ও অন্যান্য সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকুক। কিন্তু আমরা এমন কোনো বার্তা বা আচরণ দেখতে চাই না, যা বারবার ভারতের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ সংকেত দেয়।’ উৎস: কালের কণ্ঠ।
আপনার মতামত লিখুন :