শিরোনাম
◈ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হয়েও দুবাইতে খেলতে যাওয়ায় ঠাট্টা ও বিদ্রুপের শিকার পাকিস্তান ◈ শেখ হাসিনাকে ৩ বছর আগেই সতর্ক করেছিলাম, আমার কথা রাখলে এভাবে পালাতে হতো না: কর্ণেল অলি ◈ সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামান দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হলো আউটসোর্সিংকর্মীদের ◈ পাকিস্তানে স্টেডিয়াম হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নামে ◈ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত-পাকিস্তান মহারণ রোববার ◈ 'ভারত কিছু একটা করবে' এই ভরসায় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ◈ চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধারসহ গ্রেফতার ৩  ◈ নেতা–কর্মীদের ‘বিশেষ’ তালিকা করছে পুলিশ. অনেকের জামিনে সরকারের উচ্চমহলে উদ্বেগ ◈ সেনাবাহিনীতে বিশেষ পেশায় জনবল নিয়োগ ◈ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট: অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:৪৩ বিকাল
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতে উৎপাদিত মাদকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পশ্চিম আফ্রিকার লাখো যুবক: বিবিসির অনুসন্ধান

অবৈধভাবে নিষিদ্ধ ওপিওয়েড মাদক তৈরি করছে ভারতের একটি ওষুধ কোম্পানি। যা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে। মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হওয়ায় বিশ্বব্যাপী ওই ওপিওয়েড মাদক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর উৎপাদন এবং আমদানি-রপ্তানিতে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা।

তবে বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্যাপেনটাডল ও ক্যারিসোপ্রোডলের মতো মানবদেহের জন্য ভয়াবহ রকমের ক্ষতিকর ওপিওয়েড মাদক উৎপাদন করছে মুম্বাই-ভিত্তিক অ্যাভিও ফার্মাসিউটিক্যালস নামের একটি ওষুধ কোম্পানি। বিশ্বের কোথাও এই মাদক উৎপাদনের অনুমতি নেই। কিন্তু অ্যাভিও এসব মাদক উৎপাদন করে তা পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা, নাইজেরিয়া এবং আইভরি কোস্টের মতো দেশগুলোতে ছড়িয়ে দিচ্ছে। যার ফলে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছে এসব দেশের লাখ লাখ যুবক। 

এ বিষয়ে বিশদ তদন্ত করেছে বিবিসি’র আই ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। তারা দেখতে পেয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে পাওয়া ওই ওপিওয়েড মাদকগুলোর উৎপাদন হচ্ছে ভারতে। যা তৈরি হচ্ছে মুম্বাই-ভিত্তিক ওষুধ কোম্পানি অ্যাভিওর কারখানায়। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই অনুসন্ধান চালিয়েছে বিবিসির ওই বিশেষ ইউনিট। তারা অ্যাভিওর অন্যতম পরিচালক বিনোদ শর্মার ভিডিও ধারণ করেছে। যেখানে বিনোদ স্বীকার করেছেন যে, ভয়াবহ ওই মাদক ওষুধের নামে বাজারজাত করছে তার কোম্পানি। এর ভয়াবহতা জানা সত্ত্বেও তিনি এই বিষয়টিকে শুধুমাত্র ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেছেন। বিনোদ জানিয়েছেন, ওপিওয়েডের বড়িগুলো বেশ সস্তায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে কিশোর, তরুণদের লক্ষ্য করে ভয়াবহ ওই মাদক আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলের দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। যার ফলে সেখানে তরুণ এবং কিশোরদের মৃত্যুর ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। 

সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আছে ঘানার তামালেতে নামক অঞ্চল। সেখানের প্রায় প্রতিটি যুবকই এই ওপিওয়েডের প্রতি আসক্ত। চোরাকারবারিদের ওপর অভিযান চালিয়ে এই মাদকের বিলোপ সাধন করতে একটি স্বেচ্ছাসেবী টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলেন অঞ্চলটির এক নেতা। যার নাম আলহাসান মাহাম। তবে তিনি জানিয়েছেন, তার গঠিত টাস্ক ফোর্সটি কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। কেননা প্রতিনিয়ত ওপিওয়েড বন্যার পানির মতো সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। ঘানার পাশাপাশি নাইজেরিয়া এবং আইভরি কোস্টেও একই মাদক পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে কিছু ব্যবহারকারীরা এনার্জি ড্রিংকের সঙ্গে মিশিয়ে ওপিওয়েড সেবন করছে।

এই ওপিওয়েড উৎপাদনে ভারতের অ্যাভিও ফার্মাসিউটিক্যালসের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ওয়েস্টফিন ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেক কোম্পানি। মূলত এই কোম্পানিটির মাধ্যমেই পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে নিষিদ্ধ ওই ড্রাগ। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র নাইজেরিয়াতেই এই মাদক গ্রহণকারীর সংখ্যা ৪০ লাখের ওপরে। তবে এই মাদক মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে নাইজেরিয়ার সরকার। 

ইতিমধ্যেই ভয়াবহ এ মাদকের বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, ট্যাপেন্টাডল ও ক্যারিসোপ্রোডলের সংমিশ্রণ ট্রামাডলের চেয়েও আরও বেশি ভয়াবহ। মানবদেহের জন্য এই মাদক অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ফলে একজন সেবনকারী দ্রুতই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে। এই মাদক গ্রহণের ফলে ব্যবহারকারীর ঘুম, শ্বাসকষ্ট এবং মৃত্যুও হতে পারে। এসব নেতিবাচক প্রভাবের ফলে ইউরোপের দেশগুলোতে এই মাদক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মাদকের এই চোরাচালানের বিষয়ে অবহিত রয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দেশটির সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) দাবি করেছে যে, তারা যেকোনো অনিয়ম মোকাবিলায় রপ্তানি পর্যবেক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, আফ্রিকাতে নিষিদ্ধ ওই মাদক রপ্তানির জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দুর্বল নজরদারিই দায়ী। যার ফলে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর জনস্বাস্থ্য। অনুবাদ: মানবজমিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়