ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্দ্বিধায় আর নির্ভর করে থাকা যাবে না বলে মনে করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ইউরোপের উচিত নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলা এবং কেবল শক্তিবৃদ্ধির মাধ্যমেই ওয়াশিংটনের শ্রদ্ধা অর্জন সম্ভব। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জার্মানিতে আয়োজিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারকদের সামনে এক আবেগঘন বার্তায় তিনি বলেছেন, ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে রসায়নে পরিবর্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের কথায় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। ইউরোপের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে এমন বিষয়ে সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র অনাগ্রহ দেখাতেও পারে। ইউরোপের অনেক নেতা নিজস্ব একটি বাহিনী গঠনের কথা আগেও বলেছেন। আমিও বিশ্বাস করি, ইউরোপের নিজস্ব বাহিনী গঠনের উপযুক্ত সময় এসেছে।
কিছুদিন আগে এক বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চীনের হুমকি ও নিজেদের সীমান্ত ঝুঁকি নিয়ে যথেষ্ট চাপে আছে তারা। তাই, নিজেদের নিরাপত্তার প্রাথমিক দায়িত্ব ইউরোপকেই নিতে হবে। তবে একই বক্তব্যে তারা আবার আশ্বস্ত করেছে, ন্যাটো সামরিক জোটেও তারা থাকছে।
ইউরোপীয় বাহিনী গঠনের মাধ্যমে মহাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য সিদ্ধান্ত কেবল ইউরোপীয়দের হাতেই থাকবে বলে উল্লেখ করে জেলেনস্কি বলেছেন, অর্থনীতির জন্য ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন। কিন্তু মিত্র হিসেবে আমরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা স্পষ্ট নয়। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন, যেন এক ডজনের বদলে আমরা এক সুরে কথা বলতে পারি।
কেবল শক্তিশালী ইউরোপই যুক্তরাষ্ট্রের শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারবে ইঙ্গিত করে জেলেনস্কি বলেছেন, আমেরিকাকে দেখাতে হবে ইউরোপের অগ্রযাত্রা। আমাদের নীতিনির্ধারণ কেবল সম্ভাবনাময় হলেই হবে না, তা এতোটাই সমৃদ্ধ হতে হবে যেন আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে তারাই আগ্রহ প্রকাশ করে।
চলতি সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। কোনও পূর্বঘোষণা ছাড়াই ওই আলোচনায় ইউক্রেনে শান্তি চুক্তি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দিয়ে ইউরোপীয় মিত্রদের হকচকিয়ে দেন তিনি।
এই বিষয়ে মিউনিখ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠকের আগেই পুতিন সাক্ষাৎ করে ফেললে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়তে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :