বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে পুলিশের রবার বুলেটে মৃত্যু হয় আবু সাঈদের। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। মৃত্যুর আগে পুলিশের সামনে তাঁর দু’হাত প্রসারিত ছবি পরে ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম মুখ আবু সাঈদকে ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে জুলাই আন্দোলনের সময়ে সে দেশে মানবতাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। সে বিষয়ে বুধবার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন। রিপোর্টে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সাঈদের হত্যা পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘটিয়েছে এবং এটি বিচার বহির্ভূত হত্যা বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
বাংলাদেশে হাসিনা জমানায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছরের জুলাই মাসে আন্দোলনে নেমেছিলেন সে দেশের পড়ুয়ারা। সেই আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র সাঈদ। গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের রাবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন তিনি। ছোট্ট বাঁশের লাঠি নিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে পুলিশের উদ্যত বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশের বন্দুক থেকে ছুটে আসা পর পর রাবার বুলেটের আঘাতে লুটিয়ে পড়েছিলেন মাটিতে।
মৃত্যুর ঠিক আগে পুলিশবাহিনীর লাঠি-বন্দুকের সামনে দু’হাত ছড়িয়ে অকুতোভয় সঈদের সেই ভিডিয়ো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, পরবর্তী সময়ে ছাত্র আন্দোলন জোরদার করে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশের বন্দুকের নলের সামনে এমন বুক টান টান করে দাঁড়িয়ে থাকা সাঈদের সেই প্রতিবাদের ছবি।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ ছিলেন সাঈদ। ছিলেন, আন্দোলনকারী মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম ‘সমন্বয়ক’। তাঁর মৃত্যুর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ দাবি তুলেছিলেন, প্ররোচনা বা সংঘাতের পরিস্থিতি ছাড়াই সাঈদের উপর রবার বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :