বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চিনকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে— এমন দাবি তুলে আপত্তি জানিয়েছে চীন। দেশটির কূটনীতিকেরা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের চতুর্থ শ্রেণির পাঠ্যবই ও জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া মানচিত্রে এই দুটি অঞ্চলকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই বিষয়টিকে চীন ‘তথ্যগত বিভ্রান্তি’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দা ইন্ডিপেন্ডেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ সরকারকে পাঠানো এক চিঠিতে চীন পাঠ্যবই ও ওয়েবসাইটের মানচিত্র সংশোধনের অনুরোধ জানিয়েছিল।
চীনের বক্তব্য অনুযায়ী, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বইয়ে এশিয়ার মানচিত্রের যে ছবি রয়েছে, যেখানে চীন ও ভারতের সীমান্তরেখায় জ্যাংনান (অরুণাচল প্রদেশ) ও আকসাই চিনকে ভুলভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি গন্তব্য দেশের একটি তালিকা রয়েছে। সেখানে হংকং ও তাইওয়ানকে দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যা তাদের ‘এক চীন নীতির’ পরিপন্থী।
বাংলাদেশের ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা মানচিত্র নিয়েও চীন আপত্তি জানিয়েছে। তাদের ভাষ্য, মানচিত্রে চীন ও ভারতের সীমান্তরেখায় জ্যাংনান (অরুণাচল প্রদেশ) ও আকসাই চিনকে ভুলভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তাইওয়ানকে দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।
বেইজিং মনে করে, তাইওয়ান চীনের একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে একীভূত করা হবে। তাই তারা ঢাকাকে ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারত ও চীনের মধ্যে ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর লাদাখের আকসাই চিন অঞ্চল চীনের দখলে রয়েছে। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই চীন অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে।
চীনের আপত্তির পর দুই দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে আলোচনা হয়। তবে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, নতুন পাঠ্যবই মুদ্রণের প্রক্রিয়া এরই মধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে, ফলে এখন কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়।
ঢাকা বেইজিংকে চাপ প্রয়োগ না করার অনুরোধ জানিয়ে বিষয়টি পরে সমন্বিতভাবে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে কোনো পরিবর্তন করছি না, বিষয়টি আগের মতোই থাকবে।’ অনবাদ: আজকের পত্রিকা
আপনার মতামত লিখুন :