ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন।। যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটি মোদির প্রথম মার্কিন সফর। সফরকালে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক মিলিত হবেন মোদি।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, মোদি-ট্রাম্প আলোচনায় গুরুত্ব পেতে পারে বাণিজ্য মাসুল কম করা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের তেল ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনা, বেআইনি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো, চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রসঙ্গ।
সফর প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “বন্ধু ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে আছি। ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, তখন আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। এই সফরে প্রযুক্তি, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করব। দুই দেশের মানুষ যাতে উপকৃত হন, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করব।”
এদিকে, এই সফরকে ঘিরে অনেকের মনেই প্রশ্ন ট্রাম্প-মোদি বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে কী আলোচনা হতে পারে?
মোদি-ট্রাম্প আলোচনায় নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের প্রসঙ্গ আসবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে ওপি জিন্দল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব থাকবে বাণিজ্যের ওপর। তবে বাংলাদেশ-সহ দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে আলোচনা হবে বলেই মনে হয়। তবে এখনই ট্রাম্প বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে কড়া লাইন নেবেন, পুরোপুরি ভারতকে সমর্থন করবেন, তা মনে হচ্ছে না।”
শ্রীরাধা আরও বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের মাথাব্যথা কম। তার অনেক বেশি মাথাব্যথা রাশিয়া ও চীনকে নিয়ে। কিন্তু তিনি কাঁচা খেলোয়াড়ও নন। আর বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে। বাংলাদেশ থেকে যে দামে পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে যায়, সেটা অন্য কোনো দেশ দিতে পারবে না। আর যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থই দেখবে বলে আমার মনে হয়। তবে সাধারণভাবে তিনি ভারতের পাশে থাকবেন।”
এ প্রসঙ্গে প্রবীণ সাংবাদিক ও কূটনীতি বিশেষজ্ঞ প্রণয় শর্মা ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা স্বাভাবিক। বাংলাদেশের এখনকার অবস্থা, শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ভারত কীভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে সেটা মোদি জানাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ট্রাম্প দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়ে মোদিরর পরামর্শকে গুরুত্ব দিতেন। ভারতের কথামতো চলার চেষ্টা করতেন। এখানেই ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে তার একটা পার্থক্য আছে। ডেমোক্র্যাটরা মাইক্রো ম্যানেজ করতে ভালোবাসে। তারা তাদের নীতি নিয়ে চলতে ভালোবাসে। ভারতের সেখানে সুবিধা হচ্ছে কি-না, তা তারা দেখে না। কিন্তু ট্রাম্প অনেক বেশি করে ভারতের বিষয়টি মাথায় রাখেন।”