ভারতে সর্বাধিক বিয়ার বিক্রি হয় তেলেঙ্গানা রাজ্যে। রাজ্যের মানুষেরা যেন সাশ্রয়ী মূল্যে এই পানীয় গ্রহণ করতে পারে সে জন্য সরকারই তা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কিনে বাজারে সরবরাহ করে। কিন্তু আজ মঙ্গলবার রাজ্যটির সরকার বিয়ারের দাম বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বিশ্বখ্যাত হেনিকেন বিয়ারের ভারতীয় ইউনিট ‘ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ’ দাম বাড়ানোর দাবিতে কিছুদিনের জন্য সরবরাহই বন্ধ রেখেছিল।
তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী—পুরোনো সব স্টকও মঙ্গলবার থেকে নতুন মূল্য অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে।
মঙ্গলবার এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, গত জানুয়ারিতে ‘কিংফিশার’ বিয়ার প্রস্তুতকারী ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ দাম বাড়ানোর অনুমোদন না পাওয়ায় কিছু সময়ের জন্য সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। পরে সরকারের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার পর কোম্পানি আবারও সরবরাহ শুরু করে। সরকার তখন আশ্বাস দিয়েছিল, মূল্যবৃদ্ধি ও বকেয়া পরিশোধ সংক্রান্ত ইস্যুগুলো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সমাধান করা হবে।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, তেলেঙ্গানার বিয়ার মার্কেটে ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজের ৭০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, যা রাজ্যটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ৮ জানুয়ারিতে এই কোম্পানি ঘোষণা করেছিল—দীর্ঘদিন ধরে দাম না বাড়ানোর ফলে এবং সরকার বকেয়া পরিশোধে বিলম্ব করায় তাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এর ফলে তারা সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
পরিমাণের দিক থেকে ভারতের বিয়ার মার্কেট বিশ্বে অষ্টম। তবে প্রত্যেকটি রাজ্য স্বতন্ত্রভাবে অ্যালকোহল পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ এটি তাদের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।
তেলেঙ্গানায় অ্যালকোহলের সরবরাহ রাজ্য সরকার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ক্ষেত্রে সরকারই প্রথমে পণ্য ক্রয় করে, পরে তা দোকানগুলোতে সরবরাহ করে। মূলত সরবরাহ সংকট ও মজুতদারির আশঙ্কা থাকায় রাজ্যটির সরকার এই প্রক্রিয়ায় বিয়ার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
তেলেঙ্গানা রাজ্যে বিয়ারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে, ভারতের বিয়ার প্রস্তুতকারকদের সংগঠন ‘ব্রিউয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’। সংগঠনটি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বকেয়া পরিশোধ সংক্রান্ত সমস্যা দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
সংগঠনের মহাপরিচালক বিনোদ গিরি বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধির অনুমোদন হলেও, এটি শিল্পের প্রত্যাশার তুলনায় কম এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির তুলনায়ও যথেষ্ট কম।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া, কোম্পানিগুলো যেন তাদের ইচ্ছামতো মূল্য নির্ধারণ করতে পারে, যেমনটি মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের মতো বিনিয়োগবান্ধব রাজ্যগুলোতে করা হয়।’
মূল্যবৃদ্ধির অনুমোদন পেলেও ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিজ এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সরকারি আদেশ জারির পর কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য ১.২ শতাংশ কমে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :