শিরোনাম
◈ জনগণের আস্থা না থাকলে পুলিশ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে না : ডিএমপি  ◈ ডিআইজিসহ ৩ পুলিশ সুপার আটক ◈ বিপিএল সেরা একাদশ বানালো ক্রিকইনফো ◈ রাতের মধ্যে গ্রেফতার না করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-পুলিশের বিপক্ষে দাঁড়াতে হবে: সারজিস আলম (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ◈ ৬৪ জেলায় নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে বিএনপির কর্মসূচি ◈ শেখ হাসিনা দালাই লামা নন, ভারতের উচিত তাকে সমর্থন বন্ধ করা: দ্য প্রিন্ট ◈ ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ ◈ মাস্টারমাইন্ড বিশ্বাস করি না, ছাত্র নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান: জামায়াত আমির (ভিডিও) ◈ গাজীপুরে হামলার ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার ১৬

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৫:৪৭ বিকাল
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর দিল্লিতে বিজেপির ঐতিহাসিক জয়, উন্নয়ন ও সুশাসনের বিজয় বললেন মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার ২০২৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বড় জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি ঘোষণা করেন, ‘উন্নয়ন ও সুশাসন বিজয়ী হয়েছে।’

মোদি হিন্দিতে বলেছেন, ‘আমার সব ভাই-বোনকে অভিনন্দন ও প্রণাম, বিজেপিকে ঐতিহাসিক বিজয় দেওয়ার জন্য...আপনাদের সবার প্রতি আমি হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞ।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি, দিল্লির সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নত করতে কোনো প্রচেষ্টায় কমতি রাখব না...পাশাপাশি একটি উন্নত ভারত গঠনে দিল্লি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তা-ও নিশ্চিত করব।

’মোদি বলেন, ‘আমি আমার বিজেপির সব কর্মীর প্রতি অত্যন্ত গর্বিত, যারা এই বিশাল ম্যান্ডেটের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এখন আমরা দিল্লির জনগণের সেবায় আরো দৃঢ়ভাবে নিবেদিত থাকব।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এক্সে পোস্ট করে বলেন, মোদি ‘দিল্লির হৃদয়ে আছেন’ এবং ভোটাররা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ‘শিসমহল’ (বিজেপির দেওয়া তার বিলাসবহুল বাসভবনের উপহাসমূলক নাম) ধ্বংস করে দিয়েছে। শাহ বলেন, ‘যারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, দিল্লি তাদের শিক্ষা দিয়েছে...এটি তাদের জন্যও উদাহরণ হয়ে থাকবে, যারা ভুয়া প্রতিশ্রুতি দেয়।

 দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর দিল্লির ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি। বিদায়ি শাসক দল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। শনিবার সকালে ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিজেপি বড় ব্যবধানে এগিয়ে যায় এবং দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৫০টিতে এগিয়ে রয়েছে। পরে আপ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার মধ্যে ৮৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হলে ফলাফল কার্যত নির্ধারিত হয়ে যায়—বিজেপি ৪৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, আর আপ ২২টি আসনে।

তুলনামূলকভাবে আপ ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৬৭টি ও ২০২০ সালে ৬২টি আসনে জয় পেয়েছিল। অন্যদিকে বিজেপি ২০১৫ সালে মাত্র তিনটি ও ২০২০ সালে আটটি আসন জিতেছিল। ২০২০ সালের নির্বাচনে আপ ও বিজেপির মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল ১৫ শতাংশ। তবে এবারের নির্বাচনে বিজেপি মধ্যবিত্ত ভোটারদের করছাড় বৃদ্ধি ও নারীদের সরাসরি নগদ সহায়তার মাধ্যমে এই ব্যবধান ঘুচিয়েছে।

বিজেপির বিপুল জয়ের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজের আসনেও পরাজিত হন।

বিজেপি প্রার্থী প্রবেশ ভার্মার কাছে হারেন তিনি। ফল ঘোষণার পর এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় কেজরিওয়াল পরাজয় স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আজ দিল্লি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে...এবং আমরা জনগণের রায় গ্রহণ করছি। জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমি বিজেপিকে তাদের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই এবং আশা করি তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করবে।’

দিল্লির বিদায়ি মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনাওও আপের পরাজয়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এই পরাজয় আপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেই হুমকির মুখে ফেলেছে, শুধু কেজরিওয়ালের নয়।

এই নির্বাচনের আগে থেকেই কেজরিওয়াল ভাবমূর্তি সংকটে ভুগছিলেন। এর পেছনে একটি বড় কারণ ছিল দিল্লির মদের আবগারি নীতিতে দুর্নীতির অভিযোগ, যা নিয়ে বিজেপি লাগাতার আক্রমণ চালিয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীর ভেঙে পড়া অবকাঠামো, বার্ষিক বায়ু দূষণ সংকট ও যমুনা নদীর পানি সমস্যা নিয়েও তিনি সমালোচিত হয়েছেন। কেজরিওয়াল গত বছর মার্চে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দিল্লির তিহার জেলে ছয় মাস বন্দি ছিলেন। আবগারি নীতি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং পরে সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। অবশেষে দুর্নীতির অভিযোগ, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার কারণে দিল্লির ভোটাররা আপকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আপের এই পরাজয় মূলত নারী ও মধ্যবিত্ত ভোটারদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যারা ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে কেজরিওয়ালকে সমর্থন করেছিল।

সূত্র : এনডিটিভি

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়