সুইডেনে বেশ কয়েক কপি কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত এক ইরাকি ব্যক্তি মারা গেছেন। সুইডিশ মিডিয়া জানিয়েছে, কাছের একটি শহরে গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। স্টকহোমের একটি আদালত বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম সালওয়ান মোমিকা (৩৮)।
সুইডিশ রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের সামনে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে প্রকাশ্যে কোরআন শরিফে তিনি আগুন দিয়েছিলেন। তিনি ইরাকি বংশোদ্ভূত। সালওয়ান মোমিকা অভিবাসী হিসেবে সুইডেনে আসেন এবং সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সুইডিশ পাসপোর্ট রয়েছে। নিজেকে তিনি একজন নাস্তিক বলে দাবি করেছিলেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
পুলিশ বলেছে, তারা স্টকহোমের কাছে সোডারতালজে গত বুধবার রাতে বন্দুকের গুলিতে আহত এক ব্যক্তিকে পেয়েছিল। তিনি পরে মারা যান এবং তখন প্রাথমিক হত্যা তদন্ত চালানো হয়। ব্রডকাস্টার এসভিটি সূত্রের নাম প্রকাশ না করেই জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ছিলেন মোমিকা। এতে বলা হয়, মোমিকা ২০১৮ সালে ইরাক থেকে সুইডেনে এসেছিলেন।
কোরআন পোড়ানোর যুক্তি হিসেবে মোমিকা বলেছিলেন, পশ্চিমা সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে কোরআন শরিফ সাংঘর্ষিক এবং তাই এটা নিষিদ্ধ করা উচিত।
মোমিকা এবং আরো একজনের বিরুদ্ধে স্টকহোম আদালতে জাতিগত বিদ্বেষের জন্য উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল, কারণ তারা কোরআন পোড়ানোর বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল।
স্টকহোম জেলা আদালত বলেছে, একটি বিচারে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত একটি রায় স্থগিত করা হয়েছে, যেখানে মোমিকা একজন আসামি ছিলেন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আসামিদের একজন মারা গেছেন।
আদালতের একজন বিচারক গোরান লুন্ডাহল নিশ্চিত করেছেন, মৃত ব্যক্তি মোমিকা। তিনি বলেন, মোমিকার মৃত্যু কখন এবং কিভাবে হয়েছে, সে বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।
সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআনের অবমাননার কাজটি তিনিই প্রথম করেননি। কোরআন পোড়ানোর ভিডিওগুলো বিশ্বব্যাপী প্রচার হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশে ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ছাড়া এসব ঘটনা অনেক জায়গায় দাঙ্গা ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে।
সুইডেনে কয়েকবার কোরআন পোড়ানো হয়েছে। মালমো শহরে স্ট্রাম কুর্স নামের একটি কট্টর ডানপন্থী সংগঠন কোরআন শরিফ পোড়ায় এবং এর জেরে সে দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলে। স্ট্রাম কুর্স অভিবাসন-বিরোধী ও ইসলামবিদ্বেষী বলে পরিচিত এবং সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাসমুস পালুদান নামের একজন উগ্রপন্থী। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ২০২০ সালেও সুইডেনে একই রকম ঘটনা ঘটেছে। সূত্র : এপি ও কালবেলা।
আপনার মতামত লিখুন :