ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় হঠাৎ করে তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বিজেপি নেতাদের। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দলটির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, রোববার (১২ জানুয়ারি) মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে বিজেপি বিধায়কদের। কখনও সীমান্ত পরিদর্শনে, কখনও বিএসএফের আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন তারা। তবে, এই তৎপরতার পেছনে বিজেপির কেন্দ্রীয় বা রাজ্য নেতৃত্বের কোনও বিশেষ নির্দেশ রয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
মালদহ জেলার হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু রোববার তার নির্বাচনী এলাকার বৈদ্যপুর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পরিদর্শন করেন। সেখানে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা কাঁটাতারবিহীন। বিএসএফ কীভাবে এই অঞ্চল নজরদারি করছে, তা পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এ নিয়ে স্থানীয় বিএসএফ ক্যাম্পে বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন মুর্মু।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট বিধানসভার বিধায়ক অশোক লাহিড়ী রোববার ঠান্টাপাড়া গ্রামে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) আপত্তির কারণে এই অঞ্চলে কাঁটাতারের কাজ থেমে আছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনার পরও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ বিষয়ে অশোক বলেন, দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটে যাবে।
উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার আজ বিএসএফ আয়োজিত সীমান্ত যুব ফুটবল এবং ভলিবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। আংরাইল গ্রামের এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল সীমান্তবাসী ও বিএসএফের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং তার প্রভাব সম্পর্কে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা সচেতন। তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে সীমান্তে সক্রিয় হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সীমান্তবর্তী মানুষদের সমস্যার সমাধানে বিএসএফের সঙ্গে সহযোগিতা করাই আমাদের উদ্দেশ্য।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নজরে রাখার জন্য জনপ্রতিনিধিদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তবে, সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
সীমান্তে বিজেপি নেতাদের আকস্মিক তৎপরতা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা, তা নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিজেপির তৎপরতা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সীমান্তে নিরাপত্তা এবং জনগণের আস্থার প্রসঙ্গকে সামনে রেখে বিজেপি সীমান্তে অবস্থান দৃঢ় করতে চাইছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : চ্যানেল আই
আপনার মতামত লিখুন :