শিরোনাম
◈ প্রধান অভিযুক্তদের বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ হবে: তাজুল ইসলাম (ভিডিও) ◈ পুলিশ এখনো থানায় টাকা খাচ্ছে : সারজিস ◈ সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ, পাকিস্তানের ১৯ সেনা নিহত ◈ আগামী ৩০ বছরে মানুষের বিলুপ্তি ঘটাতে পারে এআই : এআই গডফাদার হিন্টন ◈ দুপক্ষের সংঘর্ষ:  ইউপি সদস্য ও তার ছেলেসহ তিনজন নিহত, এলাকা পুরুষশূন্য! ◈ দলের চাঁদাবাজির জন্য একটি দল যদিও বহিষ্কার করেছে, তবে তা যথেষ্ট নয়: উপদেষ্টা সাখাওয়াত (ভিডিও) ◈ কোন পুলিশ সদস্য অপরাধে জড়িত হয় তাদেরকেও ছাড় দেওয়া হবে না: ডিএমপি  ◈ কেউ পদ–পদবি দখলে কেউ নিজস্ব লোক পুনর্বাসনে ব্যস্ত, খুনিদের বিচারে গুরুত্ব নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান ◈ সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় কারা জড়িত? নানা মন্তব্য ◈ দুই ট্রাক নথিপত্র গায়েব হচ্ছে ভেবে আটক করলো স্থানীয় জনতা

প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:৪৭ রাত
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মনমোহন সিং পাকিস্তানে নিজের গ্রামে কেন আর ফিরে যাননি

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনমোহন সিং একবার শেক্‌সপিয়ারের জন্মস্থান স্ট্রাটফোর্ড-আপন-অ্যাভনে গিয়ে একটি নাটক দেখেন। নাটকের বিরতিতে একজন সুদর্শন ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানে হিন্দু এবং শিখদের মিস করি।’

মনমোহন সিং ওই ব্যক্তিকে চিনতে না পেরে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কে?’ তিনি উত্তর দেন, ‘আমি অবিভক্ত পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। আমার নাম খিজার হায়াত তিওয়ানা।’

পরবর্তীকালে তিওয়ানা সম্পর্কে সাংবাদিকদের কাছে মনমোহন বলেছিলেন, ‘তাঁর চেয়ে সুদর্শন মানুষ আমি দেখিনি।’

খিজার হায়াত তিওয়ানা মুসলিম লীগের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ভারত বিভাজনের বিরুদ্ধে ছিলেন। এ জন্য পাকিস্তান সরকার তাঁর জমি বাজেয়াপ্ত করে। পরবর্তীতে নিজের জন্মভূমি থেকে অনেক দূরে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় মারা যান তিনি।

তবে এই গল্পটি মনমোহন সিং কেন তাঁর জন্মগ্রামে ফিরে যাননি, তা নিয়ে। দশ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় পাকিস্তানের সরকার বারবার তাঁকে তাঁর জন্মগ্রাম পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু মনমোহন আর কখনোই পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলের চাকওয়াল জেলায় অবস্থিত গহ্ নামের সেই গ্রামটিতে আর কখনোই ফিরে যাননি।

ক্ষমতা ছাড়ার পর ভারতীয় সাংবাদিকেরা মনমোহনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনার মতো ব্যক্তিকে সবাই সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করত। তবে কেন যাননি?’

উত্তরে মনমোহন বলেছিলেন, ‘ইয়াদান বদেয়ান তালখ হুন।’ অর্থাৎ—স্মৃতিগুলো খুবই তিক্ত।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতের প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে একবার পাকিস্তানে তাঁর পৈতৃক গ্রামে ফিরে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি একটি মর্মান্তিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। আসলে সেবার প্রশ্নটি করেছিলেন তাঁরই মেয়ে দমন সিং। সে সময় মনমোহন সিং মৃদুভাবে উত্তর দেন, ‘না, সত্যিই না। সেখানেই আমার দাদাকে হত্যা করা হয়েছিল।’

গ্রামের একজন সাধারণ ছেলে থেকে ভারতের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য মনমোহনের গ্রাম বিশ্ব জুড়ে মনোযোগ কেড়েছিল। পাকিস্তানে নিজ গ্রামের মানুষেরা মনমোহনকে ‘মোহনা’ নামে ডাকেন।

মনমোহনের কন্যা দমন সিং ‘স্ট্রিক্টলি পার্সোনাল: মনমোহন এবং গুরশরণ’ নামে একটি বই লিখেছেন। মূলত বাবা-মার গল্প সম্পর্কে একটি বিশদ বিবরণ উপস্থাপন করেছেন তিনি।

জানা যায়, গহ্ গ্রামের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন মনমোহন সিং। রেজিস্ট্রার বইয়ে খোদাই করে লেখা আছে, ১৯৩৭ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি ওই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একবার সেই স্কুলটি সংস্কার করা হয়েছিল এবং তাঁর সম্মানে এটির নামকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। যা হোক, গ্রামের মানুষেরা মনমোহনকে নিয়ে গর্ব করলেও তিনি কখনোই আর তাঁদের কাছে ফিরে যাননি।

এক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, মনমোহন কখনো তাঁর গ্রামে ফিরে না গেলেও তাঁর মৃত্যুতে বিশেষ এবং সর্বশেষ দোয়াটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ৬০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানে অবস্থিত তাঁর নিজ গ্রামে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়