অথচ উল্টো সুরে সম্প্রতি বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর কথা বলেছিলেন মমতা। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সব দেশেই পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বাহিনী আছে জাতিসংঘের কাছে। শ্রীলঙ্কাতেও রাজীব গান্ধীর আমলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাহিনী পাঠানো হয়েছিল।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চাই না। বাংলাদেশ ইস্যু আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ইস্যু। কেবল ভারত সরকার তাতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমি শুধু বলতে চাই প্লিজ আমাদের লোকদের রক্ষা করুন।’
বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সীমান্ত রয়েছে, তাই বাংলাদেশে কিছু ঘটলে তার আঁচ এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও।’
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি ইঙ্গিত করে মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘যারা নির্যাতিত হচ্ছে আমি তাদের পক্ষে, আমি চাই তারা বিচার পাক। এটা (সংখ্যালঘু নির্যাতন) কোনো কাস্ট করে না, কোনো কমিউনিটি করে না। সরকার যখন দুর্বল হয়ে যায়, আর একশ্রেণির মাফিয়ারা যখন সুযোগটা পেয়ে যায়, তখন এসব ঘটনা ঘটে।’
অথচ উল্টো সুরে সম্প্রতি বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর কথা বলেছিলেন মমতা। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সব দেশেই পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বাহিনী আছে জাতিসংঘের কাছে। শ্রীলঙ্কাতেও রাজীব গান্ধীর আমলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাহিনী পাঠানো হয়েছিল।’
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মাৎস্যন্যায় কথাটা আমরা পড়েছি—যখন বড় মাছ ছোট মাছকে গিলে খায়—এ রকম অবস্থা হয়ে গেছে (বাংলাদেশে), একটা লিডারলেস (নেতৃত্বহীন) পরিস্থিতির মতো হয়ে গেছে। সে জন্যই প্রবলেমটা (ঝামেলা) হচ্ছে। কিন্তু আমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চাই না।’
মমতা ব্যানার্জি সতর্ক করে বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতা চলতে থাকলে বিহার, ওডিশাও এর প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না। বাংলাদেশ সীমান্তে যদি কেউ আগুন লাগায়, তবে বিহার-ওডিশাও রক্ষা পাবে না। আমি চাই, আমাদের প্রতিবেশীরা আমাদের সঙ্গে শান্তিতে বাস করুক।’
এ সময় তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলা রাখতে এবং নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান যে, ‘সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক এবং সেখানে সবাই শান্তিতে থাকতে পারুক।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সবকিছুর পরেও তিনি চান বাংলাদেশ তার কঠিন সময় অতিক্রম করুক।
মমতা বলেন, ‘বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সাধারণ ভাষা এবং সংস্কৃতি শেয়ার করে। ভৌগোলিক সীমারেখা আছে, কিন্তু হৃদয়ের কোনো সীমানা নেই। বাংলাদেশে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা যা-ই থাকুক না কেন, প্রতিশোধ নেওয়ার এই কথাবার্তা সত্ত্বেও আমি চাই সবাই ভালো থাকুক।’
ভারতের প্রতিবেশী দেশে অস্থিরতা কি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিচ্ছে—এ প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘আমি দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে কথা বলি না। এটা আমার ভারত।’
আপনার মতামত লিখুন :