ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনী দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। গত এক মাসে সেখানের বিশাল একটি অংশ দখলে নিয়েছে রাশিয়া। ২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপর ক্রমেই ইউক্রেনে একের পর এক অঞ্চল দখলে নেয় দেশটি। যদিও এসব অঞ্চল ফিরে পেতে মরিয়া ইউক্রেন।
রাশিয়া ও ইক্রেন যুদ্ধ এরই মধ্যে বিপজ্জনক ধাপে প্রবেশ করেছে। কারণ রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে ইউক্রেন, যা এরই মধ্যে ব্যবহারও করা হয়েছে। অন্যদিকে এর জবাবে ইউক্রেনে অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া।
যুদ্ধ এমন এক পর্যায়ে যাচ্ছে, যেটিকে রাশিয়া ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্ব হিসেবে উল্লেখ করছেন। রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ইউক্রেনে ব্যবহার করছে, আর কিয়েভ পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে রাশিয়ায় পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে।
মস্কো ও উত্তর কোরিয়া—কোনো পক্ষই সেনা উপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। গত সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনে মাঝারি পাল্লার একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া তাদের ওপর এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
রুশ সংবাদ সংস্থা এগেন্তস্তভের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাশিয়া ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলে নেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড গড়েছে।’ এতে উল্লেখ করা হয়, গত সপ্তাহে রুশ সেনারা ইউক্রেনের প্রায় ২৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে, যা ২০২৪ সালে এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ভূখণ্ড দখলের রেকর্ড। ডিপ স্টেট নামক একটি সংস্থা যুদ্ধক্ষেত্রের ফুটেজ এবং ফ্রন্টলাইনের মানচিত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, গত নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার বাহিনী ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী খারকিভ অঞ্চলে কুপানস্কের উত্তরে কৌশলগত অঞ্চল কোপানকি গ্রাম দখল করেছে। এটি দোনেৎস্ক অঞ্চলের মূল রণক্ষেত্রের উত্তরে অবস্থিত এবং বর্তমানে এটি রুশ সামরিক কর্মকাণ্ডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। তবে খারকিভ অঞ্চলের কুপানস্কে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি প্রতিহত করতে সমর্থ হয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
ফিনল্যান্ডের একটি সমর বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকবার্ড গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির সামরিক বিশ্লেষক পাসি প্যারোনিয়েন বলেন, চলতি মাসে রুশ বাহিনী আনুমানিক ৬৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। যার মধ্যে পুরো ক্রিমিয়া এবং দনবাসের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :