শিরোনাম
◈ রেফারির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ফুটবল মাঠে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, শতাধিক সমর্থকের মৃত্যু ◈ হেফাজতে ইসলামের আমির ও বায়তুল মোকাররমের খতিবসহ শীর্ষ ১২ আলেমের বিরুদ্ধে মামলা ◈ সাকিবকে ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওয়ানডে দল ঘোষণা বিসিবির, নেই শান্তও ◈ আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ নারী দল ◈ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের ফের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ◈ নেতাদের কথাবার্তায়-চলাফেরায় নির্ভর করছেন বিএনপির আগামীর ভবিষ্যৎ: তারেক রহমান ◈ মমতার বক্তব্য সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি, প্রত্যাহারের দাবি মির্জা ফখরুলের ◈ ভেস্তে গেল বেনাপোল-পেট্রাপোল বানিজ্য ও যাতায়াত পরিসেবা বন্ধের চক্রান্ত ◈ ভারতের দুঃখ প্রকাশ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ◈ ট্রেনে ছিনতাই: ওমরাহ ভিসা থাকায় সেই মা-ছেলের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিল

প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:২২ দুপুর
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসরাইলি সেনাদের মনস্তাত্ত্বিক সংকট; আত্মহত্যা ও মাদক ব্যবহার বৃদ্ধি

পার্সটুডে-২০২২ সালের এপ্রিলে ইসরাইলিদের মধ্যে খুব বিপজ্জনক সাইকোঅ্যাকটিভ ড্রাগ ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২২.৭ শতাংশ। গাজায় ইসরাইলি  আগ্রাসন শুরু হওয়ার সাথে সাথে এই হার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই সময়ে ইহুদিবাদীদের মধ্যে আত্মহত্যা এবং মাদকের ব্যবহার ব্যাপক গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরাইলি সমাজে এই মানসিক সংকট এমন একটি ইস্যু যা অন্য যে-কোনো কিছুর চেয়ে বেশি পরিমাণে দেখা যায়। পার্সটুডে আরও জানায়, 'ইহুদি ধর্ম এবং ইহুদিবাদ' বিষয়ক গবেষক আলি মারোফি অরনি মেহর ম্যাগাজিনে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। ওই প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন: গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলিদের নৃশংস আগ্রাসন শুরু হওয়ার সাথে সাথে, ইহুদিবাদীদের মাঝে মাদকাসক্তির সংখ্যা বেড়েছে। যারা অ্যালকোহল, গাঞ্জা এবং এ জাতীয় অন্যান্য ড্রাগ ব্যবহার করে তাদের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে ইহুদিবাদী সূত্রের গবেষণা অনুযায়ী ওই বছরের অক্টোবর ৭এ আল-আকসা তুফান নামে অভিযান এবং গাজা যুদ্ধের পর ইহুদিবাদী শহরবাসীদের মাঝে মাদকাসক্তির পরিমাণ ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। এমনকি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার পরিমাণও ১৮০ শতাংশ এবং ব্যথানাশক সেবনের পরিমাণ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইহুদিবাদীদের মধ্যে মাদকের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনীর মধ্যে অনেক উচ্চমাত্রার মাদক সেবনের রেকর্ড রয়েছে। ২০১২ সালে একটি ব্রিটিশ ইনস্টিটিউটের দেওয়া এক প্রতিবেদনে ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনীর মধ্যে মাদক ব্যবহারের পরিমাণ ২২ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে ১৯৯৩ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে মাদকের ব্যবহার ৪গুণ বেড়েছিল।

পরবর্তীকালে ২০২১ সালে, ইহুদিবাদী সংবাদপত্র জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেল, ইসরাইলি সেনাদের মাঝে গাঁজা সবচেয়ে জনপ্রিয় মাদক।

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে, ইসরাইলিদের অত্যন্ত বিপজ্জনক সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থ ব্যবহারের পরিমাণ ছিল শতকরা ২২.৭ ভাগ। গাজায় ইসরাইলিদের নৃশংস আগ্রাসন শুরু হওয়ার সাথে সাথে ওই হার ২৬.৬ শতাংশে পৌঁছে গেছে।

সম্প্রতি ইসরাইলি দৈনিক ইয়েদিউত আহারোনোত জানিয়েছে ইহুদিবাদী সেনাদের মধ্যে মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে সেনা কর্তৃপক্ষ তাদের মানসিক পুনর্বাসনের জন্য একটি বিশেষ বিভাগ তৈরি করতে বাধ্য হয়েছে। সেইসঙ্গে তারা মানসিক রোগীদের চিকিৎসা সহযোগিতা দেওয়ার জন্য বহু মনোরোগ বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

ইহুদিবাদী সংবাদপত্র হারেৎজ ইসরাইলি রুবিন সেন্টারের সেন্টার ফর রিসার্চিং সুইসাইড অ্যান্ড মেন্টাল পেইন-বিভাগের প্রধান ইউসি তাফি পেলেজের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বীকার করেছে, গাজা যুদ্ধ ইসরাইলি সেনাদের মানসিক অবস্থার ওপর ভয়ংকর রকমের খারাপ প্রভাব ফেলেছে। আত্মহত্যাকারী সেনাদের স্বজন-পরিজনদের বক্তব্য অনুযায়ী গাজায় অপরাধী কর্মকাণ্ডের মুখোমুখি হবার কারণে তারা মানসিক ব্যাধিতে ভুগছিল।

এ প্রসঙ্গে ইহুদিবাদী রেডিও এবং টেলিভিশন সংস্থা ২০২৪ সালের নভেম্বরে একটি রিপোর্ট করেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী আসাফ দাগান নামের একজন ইসরাইলি রিজার্ভ সেনা আত্মহত্যা করেছে। এরপর গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আত্মহত্যা করেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সৈনিক ‘সান্তিয়াগো আওয়াদিয়া’।

মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনএন গাজায় ইসরাইলি মানবিক অপরাধের মাত্রা উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন করেছিল। ওই প্রতিবেদনে এসেছে: গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা সেনাদের মধ্যে আত্মহত্যার হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করছে গাজা উপত্যকায় চলমান গণহত্যার সাথে জড়িত লোকেরা গুরুতর মানসিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন এই কারণে যে তাদের মাধ্যমে সংঘটিত মানবীয় বিপর্যয়মূলক হত্যাযজ্ঞ ছিল অবিশ্বাস্য রকমের ভয়ংকর এবং পাশবিক।

ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সদস্য এখন গাজা যুদ্ধ চলাকালে মানসিক ট্রমা কিংবা পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার PTSD-তে আক্রান্ত হয়ে ভয়াবহ মানসিক সংকটে ভুগছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়