হিন্দুস্তান টাইমস: ভারতের পশ্চিমবাংলার শিক্ষামন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বিধানসভায় দাঁড়িয়ে দাবি করেন, প্রতি দম্পতির চারজন করে সন্তান থাকা উচিত। পরে এই নিয়ে নিজের সাফাইও দেন মন্ত্রী। আর এই নিয়ে দীর্ঘ পোস্ট করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা বিন্যাস পালটানোর জন্যেই এহেন মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল আনার দাবি জানান তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিধানসভায় ‘হম দো, হমারে চার’ মন্তব্য করার পর এক সাংবাদিক এই নিয়ে প্রশ্ন করেন সিদ্দিকুল্লাকে। সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেন শুভেন্দু অধিকরী। সেখনে সিদ্দিকুল্লাকে বলতে শোনা যায়, ‘সন্তানের সংখ্যা বাড়ে স্বামী, স্ত্রী এবং তাদের প্রজননের বিষয় নিয়ে। হম দো হমারে চারের এটা হল বিশ্লেষণ।’ এদিকে সিদ্দিকুল্লার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শঙ্কর ঘোষ পয়েন্ট অফ অর্ডার এনেছিলেন। শঙ্করবাবু স্পিকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে সিদ্দিকুল্লার এই মন্তব্য অধিবেশনের কার্যবিবরণীতে যাবে কি যাবে না।
সেই বিষয়ে সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘আমার বক্তব্য রেকর্ডে থাকুক না। আমাকে যদি স্পিকার বলেন এর উত্তর দিতে তখন আমি এর বিশদ বিবরণ দিতে পারব। গ্রাম বাংলায় হিন্দু, মুসলিম সবাই চায় তাদের সন্তান থাকুক। এই নিয়ে তারা গর্বিত। চীনের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে তাদের সমসংখ্যক জনসংখ্যা থাকতে হবে তো। তাই হম দো, হমারা চার দরকার। হম দো, হমারা দো - দিয়ে হবে না।’
এদিকে সিদ্দিকুল্লার এহেন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী নিজের পোস্টে লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্ত্রী সম্প্রতি দাবি করেন যে তিনি ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ হতে দেবেন না। এখন তিনি ‘হম দো, হমারা চার’ নীতির প্রচার করছেন। ভারত এমন এক দেশ যারা জনসংখ্যা বিস্ফোরণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কয়েক দশক ধরে আমরা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে চেষ্টা করে চলেছি। আর এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে মমতার এক সিনিয়র মন্ত্রী ‘মানুষদের’ আরও বেশি করে সন্তান নিতে বলছেন। তাও আবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে।
এটা পশ্চিমবঙ্গের জন্যে বিপদ ঘণ্টি। ভারতের সবচেয়ে জনসংখ্যা ঘনত্ব এই রাজ্যে। এখানে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাস। সংখ্যালঘুদের সংখ্যা এখানে ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই মন্তব্যের মাধ্যমে কি সিদ্দিকুল্লা কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বার্তা দিলেন? এটা কি জনসংখ্যা বিন্যাসের ইঙ্গিত?’
এরপর নিজের পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী আরও লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে আমার বিনম্র আবেদন, সময় এসেছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল পাশ করিয়ে তা কার্যকর করার। এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। জনসংখ্যা বিন্যাসে পরিবর্তনের ওপর ব্রেক কষতে হবে। এটাই বিকশিত ভারতের চ্যালেঞ্জ। নয়ত এই ধরনের মানুষ সবসময়ই মাজের একটা অংশকে উদ্বুদ্ধ করে চলবে আরও বেশি সংখ্যায় সন্তান নেওয়ার জন্যে। কারণ এটাই তাদের রাজনীতির জন্যে ভালো।’
এদিকে আইন করে ভারতে মুসলমানদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন, কর্ণাটকের বিশ্ব ভোক্কালিগা মহাসমস্থান মঠের সন্ন্যাসী কুমার চন্দ্রশেখরনাথ স্বামীজি। তার এই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে স্বামীজির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। স্বামীজি বলেছেন ‘মুখ ফসকে’ এমন মন্তব্য বের হয়ে গেছে। এমন মন্তব্যের জন্যে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :