বিবিসি : পাকিস্তানে বিক্ষোভ চলাকালে কনটেইনারের ওপরে নামাজরত এক ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। ইমরান খানের দল পিটিআই দাবি করেছে, বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতার একাধিক উদাহরণের মধ্যে এটি সবচেয়ে নির্মম।
তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি একটি কনটেইনারের ওপর নামাজ আদায় করছিলেন। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা তাঁর কাছে এসে ‘নিষ্ঠুরভাবে তিনতলার সমান উচ্চতা থেকে’ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তবে বর্তমানে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা কেমন তা জানা যায়নি।
বিবিসি ভেরিফাই নিশ্চিত করেছে, এই ঘটনাটি মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ইসলামাবাদের জিন্নাহ ও আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের কোণে ঘটেছিল। যেখানে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হন।
ভিডিওটিতে দেখা গেছে, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের ঢাল বহনকারী পাকিস্তানি রেঞ্জারসের (আধা সামরিক বাহিনী) এক সদস্য নামাজরত অবস্থায় থাকা ওই ব্যক্তির কাছে যান এবং তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি কনটেইনারের কিনারা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু পরে নিচে পড়ে যান।
বিবিসি ভেরিফাই ভিডিওটি যাচাই করেছে। তারা নিশ্চিত করেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিও এবং ‘গেটি ইমেজে’-এ প্রকাশিত হওয়া এ ঘটনার ছবির সঙ্গে ওই ভিডিওটির মিল পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানে গত রোববার (২৪ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বুশরা বিবি ও খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর। বিক্ষোভ দমন করতে ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতৃত্বাধীন সরকার। দেখামাত্র গুলি করারও নির্দেশ দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। তবে পথিমধ্যেই প্রায় ১ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পিটিআই।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ইসলামাবাদে পৌঁছানোর পর আধা সামরিক বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। এতে কমপক্ষে আটজন কর্মী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করে পিটিআই। তবে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ‘বিক্ষোভে কোনো গুলি চালানো হয়নি এবং কোনো লাশ হাসপাতালে আসেনি। পিটিআই নেতারা ১০ থেকে ২০০ জন নিহত হওয়ার কথা বললেও এটি সত্য নয়।’
পাকিস্তান সরকার ইমরান খানের এই বিক্ষোভকে ‘মৃতদেহের রাজনীতি’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
টানা তিন দিনের উত্তেজনা শেষে গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইমরান সমর্থকেরা রাজধানী ইসলামাবাদের রেড জোন ডি-চক এলাকায় পৌঁছানোর পর বিক্ষোভ কর্মসূচি বাতিল ঘোষণা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :