শিরোনাম
◈ হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ◈ জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে যুবদল কর্মীকে কোপাল আ.লীগ নেতা ◈ চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল হত্যা: সিএমপি দক্ষিণের ডিসির পর কোতোয়ালির ওসিকে বদলি ◈ আমি বলেছিলাম টাকা ছাপাব না, কিন্তু এখন সাময়িকভাবে সরে এসেছি : আহসান এইচ মনসুর ◈ চিকিৎসার জন্য ভারতে না গিয়ে পাকিস্তান যান, বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্য করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু ◈ দুর্বল সরকারের কাছে নিরাপত্তা পাবেন না, মন্তব্য আন্দালিব রহমান পার্থর (ভিডিও) ◈ জাবিতে ছাত্রদলের পুনর্মিলনীতে দুগ্রুপে উত্তেজনা, বোমাসদৃশ বস্তু উদ্ধার ◈ ডিপ ফ্রিজে নারীর মরদেহ : মুক্তি পেয়ে যা বললেন মাকে হত্যায় অভিযুক্ত সাদ ◈ এবার চিন্ময় দাসের ঘটনায় নিজেদের পুলিশকে মারল ভারতীয়রা ◈ নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিন্ম রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:২৩ রাত
আপডেট : ২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতের বর্তমান ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর ওপর দুর্নীতির অভিযোগ, এ নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে

মুসলমানদের দানকৃত এমন সম্পত্তি যা শুধুমাত্র জনকল্যাণে ব্যবহার করা

বিবিসি : মুসলিমদের দান করা সম্পত্তি নিয়ে ভারতে শত শত বছর ধরে যে আইন প্রচলিত রয়েছে, তা পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে দেশটির সরকার। এই প্রস্তাব নিয়ে দেশটিতে এখন ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই আইনটি মুসলিমদের দান করা বিপুল সম্পত্তি, যেমন—মসজিদ, মাদ্রাসা, আশ্রয়কেন্দ্র এবং হাজার হাজার একর জমি পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের সম্পত্তিকে বলা হয় ‘ওয়াক্ফ’।

ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, ওয়াক্ফ হলো মুসলমানদের দানকৃত এমন সম্পত্তি যা শুধুমাত্র জনকল্যাণে ব্যবহার করা হয়। এসব সম্পত্তি বিক্রি বা অন্য কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং তা আল্লাহর সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত।

বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ওয়াক্ফ সম্পত্তির সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৭২ হাজার ৩৫১ টি। সম্মিলিতভাবে এসব সম্পত্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন রুপি।

ভারতের বর্তমান ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর ওপর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে, বোর্ড সদস্যরা দখলদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অবৈধভাবে জমি বিক্রি করছেন। এ ছাড়া সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়েও বহু সম্পত্তি দখল করা হয়েছে।

২০০৬ সালে ভারতের একটি বিচারিক কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল—ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর জমি থেকে আয় খুব বেশি নয়। জমিগুলোর যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে বছরে ১২০ বিলিয়ন রুপি আয় করা সম্ভব।

এসব দিক বিবেচনা করে ভারতের বর্তমান নরেন্দ্র মোদি সরকার একটি নতুন বিল প্রস্তাব করেছে। এই বিলে ৪০ টির বেশি সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ওয়াক্ফ বোর্ডের গঠন পরিবর্তন, জমি নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা এবং দখল হওয়া সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ভারত সরকার মনে করে, এসব সংশোধনী দুর্নীতি দূর করবে। একই সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবিও পূরণ করবে।

এদিকে বিলটি নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ পুরোনো অনেক সম্পত্তির মালিকানার দলিল অনেক ক্ষেত্রেই নেই। নতুন প্রস্তাবে এ ধরনের সম্পত্তি আইনিভাবে ওয়াক্ফ হিসেবে গণ্য হবে না। এর ফলে নতুন আইনে ভারতের বহু ঐতিহাসিক মসজিদ ও দরগাহর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

মুসলিমদের আপত্তির আরেকটি কারণ হলো—বোর্ডে অ-মুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তি। এই বিষয়টিকে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কাছে সম্পত্তি নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা থাকলে নিজেদের ক্ষমতা খর্ব হবে বলেও মনে করছে ওয়াক্ফ বোর্ডগুলো।

নতুন বিলের বিষয়ে বিবিসিকে নিজের মত জানিয়েছেন ‘শিকওয়া-ই-হিন্দ: দ্য পলিটিক্যাল ফিউচার অব ইন্ডিয়ান মুসলিমস’ বইটির লেখক ও অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেছেন—সমস্যাগুলো সঠিকভাবেই নির্ণয় করা হয়েছে। তবে যে সমাধানের কথা বলা হচ্ছে, তা ভুল।

ভারতের বিরোধী নেতারাও দাবি করছেন, সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের জমি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তাদের অধিকার খর্ব করতে চাইছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের ওয়াক্ফ সম্পত্তি সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন। তবে তা এমনভাবে হওয়া উচিত যা মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা করবে। এই বিল যদি সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তবে এটি তাদের মধ্যে আরও অনাস্থা সৃষ্টি করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়