রাশিয়া ইউক্রেনের দনিপ্রো শহরে একটি নতুন মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ওরেশনিক’ ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক টেলিভিশন ভাষণে এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, এটি ‘অপরমাণবিক হাইপারসনিক কনফিগারেশনে’ ব্যবহার করা হয় এবং এটি সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
পুতিন জানান, ওরেশনিকের গতি ম্যাক ১০ (প্রায় ২.৫-৩ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড)। এই গতি ও ক্ষেপণাস্ত্রের মাঝপথে গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা একে কার্যত অনাক্রমণীয় করে তুলেছে। তিনি বলেন, আধুনিক কোনো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম নয়।
ক্ষমতা ও ধ্বংসাত্মকতা : ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রে তিন থেকে ছয়টি পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রিত ওয়ারহেড থাকতে পারে। সামরিক বিশেষজ্ঞ ইগর কোরোচেঙ্কো বলেন, ইউক্রেনে ব্যবহৃত ওয়ারহেডগুলো প্রচলিত ছিল। তবে এটি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সমসাময়িক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রকৌশলের এক অনন্য সৃষ্টি’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পাল্লা ও ব্যবহারের ইতিহাস : রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওরেশনিকের পাল্লা ৩,০০০-৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, এটি কপুস্তিন ইয়ার রেঞ্জ থেকে নিক্ষেপ করা হয়, যা দনিপ্রো থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সামরিক বিশ্লেষক দিমিত্রি করনেভ এটিকে রাশিয়ার মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম যুদ্ধক্ষেত্র ব্যবহার বলে উল্লেখ করেছেন।
নতুন চুক্তির প্রয়োজনীয়তা : ১৯৮৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ৫০০-৫,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তবে ২০১৯ সালে দুই পক্ষই চুক্তি থেকে সরে আসে। পুতিন জানিয়েছেন, রাশিয়া পরবর্তী সময়ে মধ্যম ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
ওরেশনিকের মতো নতুন প্রজন্মের অস্ত্র ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশকে হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে। সূত্র : এনডিটিভি
আপনার মতামত লিখুন :