ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশের কথা বলে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বিরুদ্ধে প্রচারে গিয়ে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্গনের অভিযোগ দিয়েছে তৃণমূল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ নভেম্বর তালড্যাংরায় ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানকার সভা থেকে তার কিছু মন্তব্যে আপত্তি তুলেছে তৃণমূল। ওই মন্তব্যগুলোর ভিত্তিতেই কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়।
অভিযোগ, প্রতিবেশী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত দিয়ে ভিত্তিহীন প্রচার করেছেন শুভেন্দু। ভোটারদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে। যা ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষেও বিপজ্জনক। এমনকি, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকেও আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু।
কমিশনে লেখা চিঠিতে তৃণমূল বলেছে, তালড্যাংরায় সভা করতে গিয়ে শুভেন্দু গত ৯ নভেম্বর কিছু হিংসাত্মক এবং সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। প্ররোচনামূলক মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি আমাদের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে আক্রমণ করেছেন। প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন।
তালড্যাংরার সভায় গিয়ে কী বলেছিলেন শুভেন্দু? তৃণমূলের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে সেই ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য- ‘বাংলাদেশের ছবিগুলি দেখেছেন তো? ৫১৬টি মন্দির ওরা ভেঙেছে। বাংলাদেশের হিন্দুদের এবং জনজাতির উপরে কী অত্যাচার করেছে! এরা পশ্চিমবঙ্গকে দ্বিতীয় বাংলাদেশ করতে চায়।’
বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যের ভিত্তিতেই কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, ভারতীয় গণতন্ত্রে এই ধরনের কথাবার্তা অগ্রহণযোগ্য, ভিত্তিহীন এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক। এখানে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশকে এর সঙ্গে যুক্ত করে শান্তিপূর্ণ ভোটারদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টানা অনৈতিক বলেও উল্লেখ করেছে তৃণমূল।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পর কমিশনকে লেখা চিঠিতে তাদের আদর্শ আচরণবিধির সংশ্লিষ্ট তিনটি ধারা উল্লেখ করেছে রাজ্যের শাসকদল। আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী-
ভিন্ন ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বা বিভেদ তৈরি হয়, এমন কোনও কর্মসূচির আয়োজন করতে পারবে না কোনও দল। রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করতে হবে তাদের অতীত এবং বর্তমানের কাজের প্রেক্ষিতে। কারও ব্যক্তিগত জীবনের কার্যকলাপের ভিত্তিতে নয়। ভোট পাওয়ার জন্য কারও সাম্প্রদায়িক অনুভূতিকে কাজে লাগানো যাবে না। ভোটের উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য মসজিদ, মন্দির বা গির্জার মতো ধর্মীয় স্থান ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :