শিরোনাম
◈ আজারবাইজান বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিতে চায় ◈ আইন করে কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি দেওয়া অবৈধ ও অসাংবিধানিক ছিল: হাইকোর্ট ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ◈ আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ◈ বরিশাল থেকে ধরে আনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ ◈ ভারতে এসে প্রেম ও বিয়ে, নাগরিকত্ব চাইলেন বাংলাদেশের নারী ◈ বায়ুদূষণ রোধে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায় ভারত ◈ ‘আমি মরে যাইনি, বেঁচে আছি’, লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ ফোন ◈ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মৃত্যু ◈ রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক আযান ও ক্বিরাত প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট বিতরণ 

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:৩৭ দুপুর
আপডেট : ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেখ হাসিনার সুরে সুর মেলাল ভারতের শীর্ষ গণমাধ্যমও

আজ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে তাঁর বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট। সেই নূর হোসেন চত্বরকে ঘিরে আজকের দিনেও ষড়যন্ত্রের গন্ধ আগেই ছড়িয়েছিলেন গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ‘ফাঁস হয়েছে’ বলে যে অডিও ক্লিপের কথা আলোচনায় ছিল, তার সত্যতা যেন ফুটে উঠল ভারতীয় শীর্ষ গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে। কারণ, ওই অডিওতে শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ীই ট্রাম্পের ছবি সংবলিত ফেস্টুনসহ কয়েকজন আটক বলে দাবি করেছে এই গণমাধ্যমটি।

ইন্ডিয়া টুডের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় বাংলাদেশে তাঁর সমর্থকদের বিজয় মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং ফেস্টুন-ব্যানার জব্দ করা হয়েছে।

ফাঁস হওয়া অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তাঁর ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির পরিবর্তে মিছিলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি দিয়ে বানানো ফেস্টুন রাখতে হবে। সেখান হবে হামলা হলে সেই হামলার ছবি তুলতে হবে। এর জন্য আগে থেকেই সেট করে রাখতে হবে ক্যামেরা পারসনকে। এরপর হামলার ছবি আমেরিকায় পাঠিয়ে বলা হবে, ট্রাম্পের সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এভাবে বাস্তবায়ন করা হবে ষড়যন্ত্র।

এমন অডিওর সত্য-মিথ্যা নিয়ে বাহাসে গতকাল শনিবার যখন ব্যস্ত নেট দুনিয়া, তখন আওয়ামী লীগের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজ থেকে ডাক দেওয়া হয় মিছিল-সমাবেশের। আজ বিকেল ৩টায় শহীদ নূর হোসেন চত্বরে এই সমাবেশের ডাক দেয় তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন মাস পর ঢাকায় প্রথম বারের মতো কর্মসূচি দেয় দলটি। যদিও একই দিনে সকাল থেকে একই স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও গণজমায়েত করবে বলে জানায়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গণজমায়েত হলেও দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের ব্যানারে কাউকে।

তবে, ‘ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে’ দু-একজন পরিস্থিতি পাল্টাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছেন বলে দাবি ওই এলাকায় উপস্থিত কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর। আবার ‘ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী সন্দেহে’ গণজমায়েতের আশপাশ থেকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এমন যখন অবস্থা, তখন অনেকেই এসব বিষয়কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রং মাখিয়ে ফাঁস হওয়া অডিওর সুরেই বলতে শুরু করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুবিরোধী হামলার নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট দেওয়ায় বাংলাদেশ ট্রাম্পের সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। বাদ যায়নি ভারতীয় শীর্ষ মিডিয়া ইন্ডিয়া টুডেও। তারা সরাসরি বলছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান চালিয়েছে।

ইন্ডিয়া টুডের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডেনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বাংলাদেশে তাঁর সমর্থকরা বিজয় মিছিল করতে চাইলে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বাধা দেয়। কারণ হিসেবে তারা বলছে, মার্কিন নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছিলেন।

ইন্ডিয়া টুডের দাবি, তাদের কাছে এ জাতীয় ভিডিও পৌঁছেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু ব্যানার জব্দ করেছে। সেখানে ট্রাম্প, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ নূর হোসেনের ছবি সংবলিত ফেসটুন আছে। ট্রাম্পের ছবি সংবলিত ফেস্টুনে লেখা আছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, বাংলাদেশে থেকে ভালোবাসা জানাই।’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক সংযোগ নেই এবং তাঁরা সাধারণ নাগরিক।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময় ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর যারা সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে ও লুটপাটের চেষ্টা করছে, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমার সময়ে এ রকম কখনও ঘটত না।

ইন্ডিয়া টুডের দাবি, এই পোস্টের কারণে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পকে ভালোবাসা জানিয়ে করা ফেস্টুন জব্দ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অডিও কল রেকর্ড প্রকাশিত হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। যদিও সেই অডিও রেকর্ডটি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি এনটিভি। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগনেতা বাহাউদ্দিন নাসিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে কেউ যদি সেই মিছিলে ট্রাম্পের ছবি নিয়ে অংশ নেয় সেটা করতেই পারে। সে অধিকার তাদের আছে।’ এতে অনেকটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে অডিওর ষড়যন্ত্রের সত্যতা—বলে মনে করছেন অনেকে। তারপর ইন্ডিয়া টুডের এমন প্রতিবেদনে সন্দেহের দানা যেন আরও ঘণীভূত হয়ে ওঠে তাদের কাছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটি বলছে, দমন অভিযানের আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পের বিজয়ে তাঁকে একটি অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ড. ইউনূস তাঁর চিঠিতে বাংলাদেশের শান্তি ও অন্তর্ভুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে ট্রাম্পের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সংক্রান্ত মন্তব্যের সূক্ষ্ম প্রতিক্রিয়া জানান। উৎসঃ এনটিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়